রবিবার- ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তেঁতুলিয়ায় ব্যবসায়ীরা শুকনা মরিচ বেচা-কেনা বন্ধ রেখেছে, বিপাকে কৃষক

তেঁতুলিয়ায় ব্যবসায়ীরা শুকনা মরিচ বেচা-কেনা বন্ধ রেখেছে, বিপাকে কৃষক

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: তেঁতুলিয়া উপজেলার সর্ববৃহৎ হাট শালবাহান। এই হাটেই প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার কৃষকরা তাদের পন্য বিক্রি করে আসছে। প্রতি হাটে ১’শ থেকে ১’শ ৫০ টন এবং দেড় থেকে ২ কোটি টাকার কেনা বেচা হয়ে থাকে ।
গত অর্থবছরে ব্যবসায়ীদের থেকে ইউনিয়ন পরিষদ ট্যাক্স প্রতি ট্রাক বাবদ আদায় করতো ২’শ টাকা এবার ইউনিয়ন ট্যাক্স সংশোধন করে তা করা হয়েছে ঢোপ প্রতি ৩০ টাকা, এতে প্রতি ট্রাকে ব্যবসায়ীদের প্রায় ট্যাক্স গুনতে হবে ৬ হাজার টাকা যা আগের তুলনায় ৫ হাজার ৮০০ টাকা বেশি। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা শুকনা মরিচ বেচা-কেনা বন্ধ করে দিয়েছে । এতে বিপাকে পরেছে কৃষকরা, হাটে মরিচ নিয়ে বাড়িতে ফেরত নিতে হচ্ছে কৃষকদের।
এছাড়াও গত অর্থবছরে হাট ইজারাদার প্রতি কেজি শুকনা মরিচে টোল আদায় করে ৩ টাকা, তা এবার বাড়িয়ে ৫ টাকা প্রস্তাব করেছে হাট ইজারাদার।
। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হঠাৎ করে তাদের সাথে আলোচনা না করে ট্যাক্সের পরিমান ইচ্ছা মতো বাড়িয়ে দিয়েছে, যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ ট্রাক প্রতি ২০০ টাকা ট্যাক্স নিতো , এখন তা বাড়িয়ে একলাফে ৬ হাজার টাকা করেছে, এই ট্যাক্স দিয়ে মরিচ কিনা সম্ভব না বলছে ব্যবসায়ীরা
কৃষকরা বলছে, আমরা ৩ টাকা প্রতি কেজিতে ট্যাক্স দিয়ে আসছি, এবার খরায় আমাদের তেমন মরিচের আবাদ ভালো হয়নি, এমনিতেই লোকসান গুনতে হচ্ছে ।এর উপরে যদি আরো ট্যাক্স বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমরা কোথায় যাবো ।
কৃষক আবু শাহিন জানান, গাছ থেকে ১ কেজি মরিচ উঠাতে মুজুরি দিতে হয় ১০ টাকা, ৪ কেজি মরিচ দিয়ে পাওয়া যায় ১ কেজি শুকনা মরিচ। আমি দুই মন মরিচ বাজারে নিয়ে এসেছি, এসে শুনতেছি ইজারাদার ট্যাক্স বাড়িয়েছে, ব্যবসায়ীদের উপর ইউনিয়ন ট্যাক্সও বাড়িয়েছে তাই তারা মরিচ কিনছে না,খরায় মরিচের ফলন এমনিতেই কম হয়েছে,মরিচ বিক্রি করে আমি আজকে মুজুরি দিবার কথা । এই রোদে পুড়ে মরিচ চাষ করে কি লাভ হলো। সার কীটনাশক, শ্রমিকের মুজুরী সব বেড়ে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরা মাঠে মারা যাবো।
ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দীন খান বলেন, কৃষকরা মরিচ বিক্রি করলে হাট ইজারাদার পায় প্রতি কেজিতে ৩ টা, এখন দাবি করছে ৫ টাকা, ইউনিয়ন ট্যাক্স আমরা ব্যবসায়ীরা ট্রাক প্রতি দিতাম ২০০ টাকা এখন তা দিতে হবে প্রায় ৬ হাজার টাকা, একতরফা ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা না করেই ট্যাক্স বৃদ্ধি করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। অনতি বিলম্বে এর সমাধান চাই আমরা ।
শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম জানান, স্থানীয় সরকার আইন মেনেই ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে।বাজেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়েছিলো কি না সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের যে ফোরাম আছে সেখানে সংশোধনীয় মিটিং এর মাধ্যমে রেজুলেশন করে তা করা হয়েছে৷
এ প্রসঙ্গে তেঁতুলিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ যে সংশোধনী এনেছেন সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ৩০ দিনের মধ্যে সেটা পরিবর্তন – সংশোধন করার ক্ষমতা রাখে, যেহেতু ট্যাক্স পরিবর্তনের সময় এখনো অতিবাহিত হয় নি ,সেহেতু এই সময়ের মধ্যে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পযর্ন্ত পূর্বের ন্যায় ট্যাক্স আদায় চলবে ।

বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS