রবিবার- ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দেবীগঞ্জে বিয়ে করার পর,সেই স্ত্রীর নামেই থানায় অভিযোগ

দেবীগঞ্জে বিয়ে করার পর,সেই স্ত্রীর নামেই থানায় অভিযোগ

পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক প্রেমিক প্রেম করে সরকারী রেজিস্ট্রারের কাছে এবং ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করার পর সেই স্ত্রীর নামেই থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিউটি রানীকে দিয়ে অভিযোগ করিয়েছেন নবদ্বীপ রায়। এতে সহযোগিতা করছেন বিউটি রানী ও নবদ্বীপ রায়ের পরিবারের সদস্যরা।
প্রেমিকা থেকে সীমা রায় এখন নবদ্বীপ রায়ের বিবাহিত স্ত্রী। সীমা দাবি করেন তিনি একটি স্বার্থনেষী মহলের ইন্ধনের কারনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি আইগত ব্যবস্থা নিবেন।
নবদ্বীপ রায় তার বিবাহিত স্ত্রী সীমা রায় এখনো তার বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ প্রধানাবাদ মধুরামপাড়া এলাকার নবদ্বীপ রায়ের বাড়ির সামনে অবস্থান করছে। প্রেমিক নবদ্বীপ রায়ের বাড়িও এ এলাকায়। বিয়ে করা সীমা রায়কে নবদ্বীপ রায়ের বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না।
অন্যদিকে মধুরামপাড়া এলাকার গত দুই দিন ধরে বাড়ির পাশে রাত কাটাচ্ছে।
যারা সীমা রায় ও নবদ্বীপ রায়ের বিয়েতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন উল্টো তাদের নামেই দেবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারা হলেন ধরনী রায়,উজ্জ্বল রায়,সীমা রায় (নবদ্বীপের স্ত্রী), দন্ডপাল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মশিউর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ রানা, দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতু আকতার, মোঃ রকি ও লাবিবুর রহমান।
সীমা রায়ের বাড়ি দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বৈরাগীপাড়ায়৷ তার বাড়িতেই ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করে এবং সরকারি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ে করে নবদ্বীপ রায়। বিয়ের করার পর সেখানে অসুস্থ্যতার অজুহাত দেখিয়ে পুলিশের সহায়তায় দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। একদিন থাকার পর সেখান হতে পালিয়ে আসে নবদ্বীপ রায় তার বাড়িতে। সাথে সাথে সীমা রায়ও নবদ্বীপ রায়ের বাড়িতে ছুটে আসে। বাড়িতে আসার পর সীমা রায় দেখতে পায় বিউটি রানী শাখা সিদুর পড়ে নবদ্বীপ রায়ের বাড়িতে। এদিকে বিউটি রানী ও নবদ্বীপ রায়ের বিয়ের গুন্জন শোনা যাচ্ছে।
নবদ্বীপ রায়ের পরিবারের সদস্যরা জানান,ধর্মীয় ভাবেই বিউটি রানী ও নবদ্বীপ রায়ের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু সরকারি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন হয়নি বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান,সীমা রায় ও নবদ্বীপ রায়ের বিয়ে আড়াল করার জন্যই নবদ্বীপ রায়ের পরিবার বিউটি রানীকে দিয়ে বিভিন্ন নাটক করছেন।
বিউটি রানীকে নিয়ে নবদ্বীপ রায় বাড়িতে অবস্থান করলেও সীমা রায়কে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বাড়িতে ঢুকতে যাওয়ার সময় সীমা রায়ের উপর অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করা হয়।
সীমা রায় বলেন,আমি যখন দেবীগঞ্জ অলদিনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি ম্যাসে থেকে তখন নবদ্বীপ রায় মাষ্টার্সে পড়াশোনা করতো। নবদ্বীপ থাকতো আমি যে ম্যাসে থাকতাম তার পাশের ম্যাসে। তখন থেকে দুই জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে রুপ নেয়। বিয়ের প্রলোভনে অসংখ্য বার শারিরীক সম্পর্কও হয়েছে বলে জানান তিনি৷
কিন্তু কিছুদিন আগে আমাকে না জানিয়ে গোপনে বাড়ির পাশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিয়ে ঠিক করে৷ খবর পেয়ে আমি নবদ্বীপের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে ২৪ দিন ধরে অবস্থান নেই। গত বুধবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সাথে বাসায় ফিরে আসি। সেখানেই নবদ্বীপ রায় আমাকে সামাজিক রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়।
সীমা রায়ের ভাই উজ্জ্বল রায় ও মামা ধরনী রায় বলেন, সীমা রায়কে নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার পর বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করে ও সরকারি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করে নবদ্বীপ রায় ও সীমা রায়ের বিয়ে হয়।
দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রন্জু আহম্মেদ জানান,বিউটি রানী যে অভিযোগ দিয়েছেন তাতে ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে কক্সবাজার ও নীলফামারী। কিন্তু তারা অভিযোগ দিয়েছেন দেবীগঞ্জ থানায়। আমরা তদন্ত করছি যদি দেবীগঞ্জে ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি দেবীগঞ্জ এ ঘটনা ঘটার প্রমান না পাওয়া যায় তবে যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সেখানে আইনী পদক্ষেপ নিতে বলবো।
তিনি আরও জানান, সীমা রায় যে নবদ্বীপ রায়ের বাড়িতে ৩দিন ধরে অবস্থান করছে এ বিষয়টি সীমার পরিবার থেকে জানানো হয়নি। সীমার পরিবার যদি ব্যবস্থা নেয় সেক্ষেত্রে সহযোগিতা করবো।

৩৩৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares