রবিবার- ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তেতুলিয়া শালবাহান ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

তেতুলিয়া শালবাহান ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

পঞ্চগড় : গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে খাজনার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মিথ্যা অভিযোগ তুলে কতিপয় অসাধু লোকজন মরিচ ও সুপারি কেনা-বেচা বন্ধ করে দেয় ব্যাবসায়ীরা।
কিছু অসাধু ব্যাক্তি ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটান তারই প্রেক্ষিতে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে সংবাদ সম্মেলন করেছে তেতুলিয়া উপজেলার ৪নং শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন এই ইউনিয়নে কৃষকের কাছ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কোন ইজারা নেয় না।
ব্যাবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে প্রতি ৪০ কেজিতে এক কেজি অতিরিক্ত মরিচ নেয়ার সময় নিষেধ করলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য করে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি চেয়ারম্যানের চেম্বারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তেঁতুলিয়া উপজেলার মরিচ ও সুপারি কেনা- বেচার সর্ববৃহৎ শালবাহান হাট। সপ্তাহের দুইটি হাটের (শনিবার ও বুধবার) মধ্যে প্রতি হাটে প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মরিচ ও সুপারি কেনা-বেচা হয়। হাটে মরিচ, সুপারি, ভুট্টা, শাক সবজি, ধান, পাট,গরু ,ছাগল সহ নানা ফসল কেনা-বেচা করেন চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করেন এখানে। তবে গত সপ্তাহ আগে কৃষক-চাষীদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা নির্ধারীত ক্রয়ের থেকে অতিরিক্ত এক কেজি করে মরিচ সংগ্রহ শুরু করে।
এতে লোকশানের পরার সঙ্কায় চাষিরা ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। এর মাঝে হাট ইজারাদার রফিকুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের লোকজনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
এর মাঝে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) শালবাহান হাটে ব্যবসায়ীদের নিয়ে মরিচ-সুপারি ক্রয় বন্ধ করে রাখার অভিনয় করে গণমাধ্যমকর্মীদের ডাকে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, একই সময় নিজস্ব লোকজনকে নিয়ে পরিকল্পিত উত্তেজনামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করে। যেটা পুরো তাদের সাজানো। আর সরকারি খাজনার টাকা ইজারাদারের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন পায়।
এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কোন হাত নেই। যদি এই ইউনিয়ন থেকে কোন পণ্য অন্য জেলায় ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে সে সকল ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে ইউনিয়ন পরিষদের গ্যাজেট অনুযায়ী একটা ট্যাক্স নেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের কাছ থেকে কোন ট্যাক্স নেয়া হয় না।
চেয়ারম্যান বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে কৃষকদের বাজারে মরিচ ও সুপারি বিক্রয়ে খাজনা নির্ধারণ করে দেয় কেজি প্রতি ৩ টাকা।
কিন্তু এর মাঝে আমার কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় এবং স্থানীয় প্রশাসন হিসেবে তাদের নির্দেশনা প্রদান করায় তারা পরিকল্পিত ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের নাম করে নিজেরাই অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে উল্টো ইউনিয়ন পরিষদের সুনাম খুন্ন করছে। এর সব কিছুর পেছনে হাট ইজারাদারের হাত রয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, কৃষকের কাছ থেকে মণ প্রতি এক থেকে দেড় কেজি মরিচ কর্তন না করা হয়।
৩ টাকার বেশি খাজনা যেন না আদায় করা হয়, এবং গরু প্রতি মসজিদ-মাদ্রাসার নামে অতিরিক্ত চাদা না নেয়া হয়। কারণ প্রতিবছরে প্রায় মসজিদ-মাদ্রাসার নামে এ হাট থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আদায় হয়। যার মধ্যে মাত্র এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা মসজিদে দিয়ে ইজারাদাররা ভাগ করে নেন।
প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে এই ধরণের প্রতারণা এবং কৃষকের লোকসানে ফেলার বিষয়টি নজরে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম।
এসময় প্যানেল চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ, ৩ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য জাফর আলী, ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন ও মহিলা ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন৷

১২২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares