শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ক্রেতার নাগালের বাইরে সবজি মাছ ডিম ডাল পেঁয়াজ

ক্রেতার নাগালের বাইরে সবজি মাছ ডিম ডাল পেঁয়াজ

ভোলা প্রতিনিধিঃ সারাদেশে সপ্তাহ খানেক আগে টানা বৃষ্টিপাত হয়। যার ফলে বাজার গুলোতে পণ্যের সরবরাহ কমে দাম বেড়ে যায়। সেই অস্থিরতা এখনো কাটেনি বরং উল্টো সংকট যেন দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। সবজি, মাছসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে।

রবিবার (২৬ নভেন্বর) ভোলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো কোনো পণ্যের দাম কমেনি। বরং একটু একটু করে আরও বেড়েছে।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে। অন্যদিকে, প্রতি কেজি চাষের মাছের দাম এখন ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। আর দেশি মাছগুলোর দাম যেন আকাশছোঁয়া, বিক্রি হচ্ছে আগের তুলনায় কেজি প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তিতে।

ডিমের বাজারে বেশ কয়েক মাস হলো চলছে অস্থিরতা। শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার থেকে ফার্মের লাল-সাদা ডিম কিনলে ডজন পড়ছে ১৪০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের একটি ডিম খেতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা।সরকারের বেঁধে দেওয়া আরেক পণ্য পেঁয়াজ। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি যার দাম বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। খেশারী ডাল-১৪০, এ্যাংকর-৮০ ও মোটা মশারী ডাল-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফলে পণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজারদরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। রিকশাচালক জাহাঙ্গীর বলেন, দামের চোটে আমরা কিছুই কিনতে পারছি না। আগে মাছ-মাংস না খেতে পারলে শাকসবজি খেয়ে থাকতাম। এখন সেটাও সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে চললে গরিব মানুষ না খেয়ে শুকিয়ে যাবে। সবজি বিক্রেতারা বলছেন, খেতে সবজি পচে নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ না থাকায় দাম বেড়েছে।

বাজারে বর্তমানে গোল বেগুন ১২০-১৪০ টাকা এবং লম্বা বেগুন ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলা, কচুরমুখি, বরবটি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। আর ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। কম দামের মধ্যে মুলার কেজি ৫০-৬০ টাকা আর পেঁপে ৪০-৫০ টাকা। ১০০ টাকার নিচে কোন লাউ নাই।

বাজারে দর বাড়তি মাছ-মাংসেরও। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কম আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনেন পাঙ্গাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজি এখন ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন বলেন, এমনিতেই অনেক কষ্টে চলতে হচ্ছে। বাড়তি দামের ফলে নূন্যতম শাক-সবজি কিনতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। মাছের বাজারে তো ৫০০ টাকার নিচে মাছ পাওয়াই স্বপ্নের ব্যাপার। সবার আয় তো সমান নয়। এভাবে চলতে থাকলে সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকা কঠিন।

২৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares