মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
<span class="entry-title-primary">বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের মূল্যে চলছে ঊর্ধ্বগতি</span> <span class="entry-subtitle">ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’</span>

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের মূল্যে চলছে ঊর্ধ্বগতি ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’

নিত্যপণ্যের লাগাম টানা যাচ্ছে না। ফলে চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েইে চলেছে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের মূল্যে চলছে ঊর্ধ্বগতি। ভোজ্যতেল ছাড়াও বাজারে এখন মাংসের দাম বেশ চড়া। বেড়েছে চিনির দামও। স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সব কিছু।
গত কয়েক মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের। ব্যয় বৃদ্ধির চাপ সইতে না পেরে পরিবর্তন আনছে জীবনধারায়। খাদ্যাভ্যাস ও আবাসস্থল পরিবর্তন করে কোনোরকমে টিকে থাকতে নানা পথ অবলম্বন করতে হচ্ছে তাদের। দিন এনে দিন খাওয়া এসব মানুষেরা আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলতে পারছেন না। যার ফলে তাদের দু-বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এমন সময়ে ভোজ্যতেলের আরেক দফা মূল্য বৃদ্ধি ভোক্তাদের ওপর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ বলে মনে করছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা।  নতুন দাম অনুযায়ী ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হবে ৯৮৫ টাকায়। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১ লিটার ১৮০ টাকা ও পাম তেল ১ লিটার বিক্রি হবে ১৭২ টাকায়।
নতুন করে দাম বাড়ার বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান সময়ের আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে, সেই অনুযায়ী দেশের বাজারেও ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকার। কিন্তু সেই তুলনায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। আমাদের কর্মসংস্থান কমেছে। করোনার প্রভাবে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের বেতন কমে গেছে। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের পাশাপাশি নতুন করে তেলের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে আরো বিপাকে ফেলবে।
ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি নতুন করে ক্রেতাদের ওপর চাপ তৈরি করবে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, সাধারণ মানুষের তো ক্রয় ক্ষমতা সীমিত। মূল্যস্ফীতি ইতিমধ্যেই তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সুতরাং বর্ধিত মূল্যের বাস্তবতা মানলেও তাদের তো জীবন যাপনের জন্য এই আয় যথেষ্ট না। এই ব্যয় তাদের জন্য মেনে নেওয়া কষ্টকর। তাই সরকারের উচিত ওএমএস কার্যক্রমে এইসব পণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা।
এদিকে ঈদের পরে গরুর মাংসের দাম ৭০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। গত মাসে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হলেও ঈদের কয়েকদিন আগেই তা ৭০০ টাকা হয়ে যায়। অন্যদিকে ঈদের আগের দিন ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০ টাকা হলেও, ২০ টাকা বেড়ে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। দেশি মুরগি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ঈদের পরে কিছু সবজির দাম কমলেও বেশিরভাগের দামই রয়েছে অপরিবর্তিত।
সরকারি গুদামে বর্তমানে ১৭ লাখ টনের বেশি চাল মজুদ রয়েছে, যা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় সরকারের চালের মজুদের রেকর্ড। এর পরও বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসছে না। সাধারণ মানের মোটা চালের দামও এখন অনেক মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ৬৫ টাকার মিনিকেট চাল এখন কেজিপ্রতি ৬৮ টাকা। এছাড়া নাজিরশাইল চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। পোলাওয়ের চালের দাম ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।
এদিকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ার পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দামও বেড়েছে। ফলে মানুষের যাতায়াত খরচও বেড়েছে।
১৪৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares