মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঈদের আনন্দ শোকে পরিনত : ভোলার-মনপুরায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন কলেজ ছাত্র ও গার্মেন্স শ্রমিক সোহেল

ঈদের আনন্দ শোকে পরিনত : ভোলার-মনপুরায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন কলেজ ছাত্র ও গার্মেন্স শ্রমিক সোহেল

ভোলা প্রতিনিধিঃ ঈদের আগের দিন (শুক্রবার) ঢাকা থেকে ফারহান-৩ লঞ্চযোগে অন্যান্য যাত্রীর সাথে ভোলার মনপুরায় বাড়ি ফিরছিলেন ৩ বন্ধু। এর মধ্যে লঞ্চটি ফতুল্লার কাছে ঝড়ের কবলে পড়লে লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে যায়ন তিন বন্ধু। দুই বন্ধু সাঁতরিয়ে তীরে উঠলেও এক বন্ধু মোঃ সোহেল নিখোঁজ ছিল। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পরে। মুহুর্তের মধ্যে ঈদের আনন্দ শোকে পরিনত হয়। স্বজনেরা ছুটে যান ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা নদীতে। অবশেষে রোববার সকালে ঢাকার ফতুল্লা ব্রিজের কাছ থেকে নিখোঁজ ওই বন্ধুর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। রোববার রাত ১১ টায় ট্রলার যোগে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মনপুরা সরকারি ডিগ্রী কলেজের ছাত্র ও শ্রমিক সোহেল।

সোমবার সকাল ১০ টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ছাত্র ও শ্রমিক সোহেলকে।

নিহত ওই ছাত্র ও শ্রমিক হলেন, মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদ মাঝির বড় ছেলে মোঃ সোহেল। সে মনপুরা সরকারী ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।

লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়া অপর দুই বন্ধু হলেন-মোঃ শফিকুল ইসলাম শাওন ও মোঃ হাসনাইন। এদের বাড়ি উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট গ্রামে।

নিহত ওই ছাত্রের বাবা আবদুর রশিদ মাঝি জানান, ছেলে আমার জন্য নতুন পাঞ্জাবী, লুঙ্গি ও বাড়ির সবার জন্য মাড়ি, জামা-কাপড় কিনে ফারহান-৩ লঞ্চ যোগে বাড়ি বাড়ি ফিরছিলেন। এবার সবাই মিলে ঈদে আনন্দ করবো। কিন্তু আল্লাহ আমার ছেলেরে লইয়া গেছে বলে হাউ মাও করে কেঁদে উঠেন তিনি।

কিছুক্ষন পরে তিনি অভিযোগ করে বলেন, লঞ্চ থেকে জাদু (ছেলে) পইড়া গেলেও লঞ্চের লোকজন তাদের খোঁজ না কইরা লঞ্চ চালাইয়া চইলা আসে। যদি লঞ্চের লোকজন তখন খোঁজ করতো তাহলে জাদু (ছেলে) বাইচা যাইতো। একই অভিযোগ করেন লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে সাঁতরিয়ে তীরে উঠা অপর দুই বন্ধু মোঃ শফিকুল ইসলাম ও মোঃ হাসনাইন।

এই ব্যাপারে ফারহান-৩ লঞ্চের ঘাট সুপার ভাইজারসহ লঞ্চের সুপার ভাইজার মাসুদ এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু বলতে রাজি হননি।

মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, ঘটনার পর শুক্রবার রাত ১১ টায় ফারহান-৩ লঞ্চের সুপার ভাইজার মাসুদ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,যারা পড়ে গেছে তারা সবাই সাঁতরিয়ে তীরে উঠে গেছে। পরে নিখোঁজ সোহেলে এর পরিবার থানায় এসে সোহেল নিখোঁজ রয়েছে বলে অভিযোগ করলে ফের লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করি।

তিনি আরও জানান, সোহেল পরিবারের সদস্যদের জিডি করতে বললেও তারা করেনি। তবে নিখোঁজ সোহেল এর মরদেহ ফতুল্লা ব্রিজের কাছ থেকে নৌ পুলিশ উদ্ধার করেছে।

নিহত সোহেলের পরিবারের আইনি আশ্রয় নিবেন কোথায় এমন প্রশ্নে ওসি জানান, যেইখানে সোহেলের মরদেহ পাওয়া গেছে সেখানের থানায় আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৩৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares