শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পঞ্চগড়ে চাঁদা না দেয়ায় ঘর নির্মানে বাধা ও হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

পঞ্চগড়ে চাঁদা না দেয়ায় ঘর নির্মানে বাধা ও হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

পঞ্চগড় : নিজ নামীয় আরএস রেকর্ডিয় জমিতে ঘর নির্মাণ করতে যাওয়ায় ভুমিদস্যুদের চাঁদা দাবী ও হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে পঞ্চগড় জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও পঞ্চগড় সুগার মিলের অবসরপ্রাপ্ত সিডিএ আবু বকর সিদ্দিক ও তার পরিবার।
দীর্ঘদিন টিন সেটে বাড়িতে বসবাস করায় নতুন করে ভবন নির্মান কাজ শুরুর সময়ে প্রতিবেশি সোহেল রানা ও তার ভাই জুয়েল রানার পরিবার ও ভাড়াটিয়ে লোকজন দিয়ে বাড়ির প্রাচীর ভেঙে ফেলাসহ পাঁচ লক্ষ টাকা চাদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে কোন কাজ করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়াসহ পরিবারটির লোকজনকে একাধিকবার মারধর করা হয় বলেও সংবাদ সম্বেলনে অভিযোগ করা হয়। মামলা করা হলেও তাদের নির্যাতন থেকে মুক্তি পাচ্ছেনা নিরীহ পরিবারটি।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন বৃদ্ধ আবু বকর সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় তারা জানান, ১৯৮৯ সালে পঞ্চগড় জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকায় দুটি দলিলে সাড়ে ৫ শতক জমি কিনে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন পঞ্চগড় সুগার মিলের অবসরপ্রাপ্ত সিডিএ আবু বক্কর সিদ্দিক।
১৯৯৭-১৯৯৮ এই জমিটি আরএস রেকর্ডভুক্ত হয় আবু বক্কর সিদ্দিক নামে । গত ১০ নভেম্বর ২০২২ তার পুরনো বাড়ির ঘরদোড় ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
বেশ কয়েকদিন পরে হঠাৎ প্রতিবেশি সোহেল রানা ও জুয়েল রানা তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পালিয়ে যায় তারা।
পুলিশ চলে গেলে তারা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বসে। চাঁদা না দিলে ভবন নির্মাণ করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়।
গত ২৯ ডিসেম্বর আবারো পরিবারটির উপর হামলা করে তারা। এ সময় সিদ্দিকের মেয়ে বদরুন্নহার লাকীকে মারধর করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় এবং বাড়ির প্রাচীর ভেঙে ফেলে দখল করা চেষ্টা করে তারা।
কোনমতে পালিয়ে থানায় গিয়ে সোহেল, জুয়েলসহ তাদের পরিবার স্বজনদের মধ্যে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করে আবু বকর সিদ্দিক।
মামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সরে যেতে বললে তারা পুলিশের উপর আরও চড়াও হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ চার নারীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে বের হয়ে আসে।
গত সোমবার নির্মান কাজ শুরু করলে তারা আবারো ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এমনিভাবে পরিবাটিকে ভবন নির্মাণ করতে দেয়া হচ্ছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ আবু বকর সিদ্দিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, এখানে আমার কেউ নেই। আমার ছেলে বাইরে চাকরি করে। আমি আমার স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে থাকি। আমার আরএস রেকর্ডিও জমিতে এখন ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে চাঁদাবাজদের কবলে পড়েছি। অনৈতিকভাবে তারা ৫ লাখ টাকা দাবি করছে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা তাদের লোকজন নিয়ে যখন তখন হামলা করে বাড়ি ঘর ভাঙচুর করছে। আমাদের মারধর করছে। মামলা করেও তাদের উৎপাত থেকে রেহাই পাচ্ছি না। তাদের ভয়ে আতঙ্কে সব সময় দিন কাটাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল রানা গংরা বলেন, তারা মিথ্যে অভিযোগ করছে। ওই জমিতে আমাদের অংশ রয়েছে। জমিটি ভুলক্রমে তাদের নামে রেকর্ড হয়েছে। আমরা রেকর্ড বাতিলের জন্য আবেদন করেছি।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, পরিবারটি সত্যিকার অর্থেই দারুনভাবে নির্যাতিত হচ্ছে তাদের দ্বারা।
নিজের শেষ সময়ে একটি বাড়ি করতে গিয়ে এমন নির্যাতন সহ্য করা যায় না। আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রভাবশালী কিছু ভূমিদস্যু তাদের ইন্ধন জোগাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা রয়েছে। আমরা এর মধ্যে চার আসামীকে গ্রেপ্তার করেছি। আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
পরে তারা জামিনে বের হয়ে এসে আবারো ঔই পরিবারের উপর উৎপাত শুরু করেছে। আসামী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

১৪২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares