মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলায় ৩ মাস ধরে বন্ধ বিদ্যুৎ প্লান্ট আর চালু না হওয়ার আশংকা

ভোলায় ৩ মাস ধরে বন্ধ বিদ্যুৎ প্লান্ট আর চালু না হওয়ার আশংকা

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় একদিকে গরম আর অন্যদিকে বিদুৎতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ২৫ লাখ জনগন। দিনে ও রাতে বিদুৎতের এমন অবস্থায় বিপর্যস্ত জনজীবন। তবে সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়ছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার মালিকরা। এদিকে মেশিনটির সব পার্স নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে ৩ মাস ধরে সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট মেশিনটি বন্ধ থাকায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদুৎ বিভাগ। তবে রেন্টাল কর্তৃপক্ষ বলছে বিষয়টির সমাধানের ব্যাপারে প্রচেষ্টে চলছে। কিন্তু কোন সংবাদ কর্মীকে ভিতরে গিয়ে মেশিনটি পরিদর্শন করার অনুমতি দেননি কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) নির্বর যোগ্য সুত্রে জানা গেছে, মেশিনটি চালু হওয়ার আর সম্ভাবনা নাই, কর্তৃপক্ষ ভোলা বাসির সাথে লুকোচুরি খেলছে।
আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে কখনও ৩৮ ডিগ্রী কখনও ৩৭ ডিগ্রী তাপমাত্রা উঠা নামা করায় প্রচন্ড তাপদাহ বিরাজ করছে উপকূলীয় জেলায় ভোলায়। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। এর মধ্যে আবার বিদ্যুতের লোডশেডিংয় ভোগান্তির মাত্রা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট বড় ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, চরম দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষগুলো। বিপাকে পড়েছে ছোট, মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ীরা।
ভোলার ইলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী জহির ও মিজান বলেন, আমাদের বব্যবসা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দুস্কর হয়ে পড়েছে। ক্যাবল অপারেটর কৃষ্ণ দাস বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে লোডশোডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। গৃহিনী লুৎফা বেগম বলেন, বিদ্যুৎ এতো বেশী লোডশেডিং হচ্ছে, বাসার ফ্রিজ চলছে না, রাতে আরো বেশী গরম পরে তখন ভোগান্তির যেন শেষ নেই। ২৪ ঘন্টায় ২০ মিনিট বিদুৎ পাওয়া যায়না। শীত মৌসুমেও এ অবস্থা ছিল কিন্তু শীত থাকায় তা বুঝা যায়নি।
ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ফর ডিস্টিবিউশন(ওজোপাডিকো) কোম্পানী লিঃ ও পল্লী বিদুৎ সমিতির আওতায় পুরো জেলায় ৫ লাখের অধিক গ্রাহক রয়েছে। যারা জেলার সাত উপজেলায় বিদুৎ সরবরাহ করছেন। কিন্তু পুরাতন মেশিনটির অধিকাংশ পার্স নষ্ট হওয়ার কারনে সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট বিদুৎ প্লান্ট টানা ৩ মাস ধরে বিকল থাকায় বিদ্যুতের সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ দিতে না পারায় ভোগান্তিতে গ্রাহকরা। দিন দিন গ্রাহকদের ক্ষোভ বাড়ছে, যে কোন সময় বিদুৎ বিভাগে ৮৮ সালের মত ঘটনা ঘটার আর্শকা করছেন অভিজ্ঞরা।
তবে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ না থাকায় বাধ্য হয়েই লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে জানান, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউনুস। তিনি বলেন, ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ৮০ হাজার গ্রাহকের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয় গ্রীড থেকে আমরা পাচ্ছি ২২ মেগাওয়াট। যে কারণে লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছি। ভোলা সদরের বাস টার্মিনাল এলাকায় যদি গ্রীড সাবষ্টেশন করা যায় তাহলে এমন সমস্যা থাকবে না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে , ৪ লাখ ৩৮ হাজার গ্রাহক থাকলেও এ মুহুর্তে তাদের তেমন লোডশেডিং নেই। জাতীয় গ্রীড থেকে সরবরাহ হচ্ছে বিদুৎ।
ভোলার সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমা স¤পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, মেশিনটি পুরো অকেজো হওয়ার কারণে তা আর চালু করা যাচ্ছেনা। আশা করি আগামী ৬ মাসের মধ্যে নতুন মেশিন আসলে এ সমস্যার সমাধান হবে।ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ফর ডিস্টিবিউশন(ওজোপাডিকো) কোম্পানী লিঃ আদো মেশিন সরবরাহ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্ধিহান ভোলার সচেতন মহল ও সমাজ সেবকেরা। ভোলা জেলা সদরে গ্রীড সাব স্টেশন স্থাপনসহ বিদুৎ সমস্যার দ্রæত সমাধান চান ভোলাবাসী।

৮৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares