শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ

বিটন চৌধুরী। জেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি। ২০২৩ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বোর্ড পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)। শিক্ষার বিপর্যয় রোধে শিক্ষা মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন, বিশেষ শিক্ষা বোর্ডগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রাবাস চালু করার দাবি জানিয়েছে এ ছাত্র সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর ) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

নেতৃদ্বয় উদ্বেগ প্রকাশ করে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ২০২৩ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার গত বছরের তুলনায় অনেক পিছিয়েছে। এর আগে মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষায়ও এ অঞ্চলে পাসের হার কমেছে। প্রতি বছর দেশের অপরাপর অঞ্চলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাশের হারে পিছিয়ে থাকলেও সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সমাধান বা উত্তরণের জন্য উপযুক্ত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বেহাল অবস্থা ও দিন দিন বিপর্যয়ের পথে ধাবিত হচ্ছে। তাই আমরা পাহাড়ে শিক্ষার বিপর্যয় রোধকল্পে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন, বিশেষ শিক্ষা বোর্ড গঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রাবাস চালু করার দাবি জানাচ্ছিয়েন।

পাহাড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র নিয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যে চলছে। এর সাথে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, এমপি, মন্ত্রী এবং সরকারে প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই জড়িত রয়েছে। পাহাড়ে একদিকে শিক্ষার গুণগত মান নেই, অপরদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে অদক্ষ-অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার এই বেহাল অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও বান্দরবান-রাঙামাটি সদরের কলেজগুলোতেও ব্যাপক শিক্ষক সংকট এবং ছাত্রাবাস, অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। নেই বিজ্ঞান বিভাগের পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের গবেষণাগার ও পর্যাপ্ত উপকরণ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে চলমান এসব সংকট নিরসনে সরকার ও শিক্ষামন্ত্রণালয়কে যথাপোযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণের আহŸান জানিয়ে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে জাতিসত্তাগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের অভাবে আলোর মুখ দেখছে না। নিজস্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা, বাংলা ভাষায় শিক্ষা গ্রহণে দুর্বোধ্যতা, পাহাড়ে অর্থনৈতিক দারিদ্র্যতা, পর্যাপ্ত স্কুল-কলেজ ও ছাত্রাবাস সংকট এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় বোডর্ পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় তৈরি করেছে। কাজেই, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মনে করে, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বিপর্যয় রোধ করার বিশেষ শিক্ষা বোর্ড চালুকরা জরুরী।

৩৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares