শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঈদুল আজহায় সারাদেশ থেকে পর্যটক না আসায় হতাশ ব্যবসায়ীরা

ঈদুল আজহায় সারাদেশ থেকে পর্যটক না আসায় হতাশ ব্যবসায়ীরা

বিটন, চৌধুরী খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ও চর্তুত দিনে সারাদেশ পর্যটকনা আসলেও স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় খাগড়াছড়ির তেরাংতৈকালাই ( রিসাং ঝরনা), আলুটিলা জেলা পরিষদ পার্কসহ সকল পর্যটনকেন্দ্রে। পর্যটন শিল্প ব্যবসায়ীরা হতাশায় দিন কাটছেন।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে তেরাংতৈকালাই (রিসাং ঝরনা), আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ও জেলা পরিষদ পার্কে গিয়ে দেখা যায়, সারাদেশ থেকে পর্যটকের উপস্থিতি নেই। কিন্তু স্থানীয়দের পদচারনায় সকল পর্যটন কেন্দ্রে ভরপুর ছিল।

এদিকে গত ঈদুল আজহা তুলনায় এ বছর পর্যটক না আসায় খাগড়াছড়ি জেলার হোটেল, মোটেল গেস্ট হাউজ ও বার্মিজ দোকান মালিকরা হতাশ। ভালো নেই হোটেল মালিকরা।

হোটেল মালিকরা বলছেন, তীব্র গরমে অসস্থি গেল। আবার বাচ্চাদের পরীক্ষা গেল। মানুষের অর্থনৈতিক বিষয়ও আছে।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা আপন, আদর, কমল বলেন, ঈদুল আজহা ছুটিতে খাগড়াছড়িতে প্রথম পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। গরমে ঝরনায় ¯œান করে উঠেছি। গরমে ভালো লেগেছে। খুবই রোমাঞ্চকর ঝরনা এটি। ঝরনা দেখা শেষ করে আলুটিলায় যাব।

মাটিরাঙ্গা উপজেলার তেরাংতৈকালাই ( রিসাং ঝরনা) টিকেট কাউন্টারের মেনেজার রিপনজয় ত্রিপুরা বলেন, শুক্রবার ছয়শ পর্যটক বেড়াতে এসেছে। বেশি ভাগ স্থানীয় মানুষরা বেড়াতে এসেছে।

তেরাংতৈকালাই ( রিসাং ঝরনা) দোকান মালিক প্রিতম ত্রিপুরা বলেন, ঝরনায় পর্যটক আসলে বেচাকেনা ভালো হয়। তখন মন ভালো লাগে।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্কের ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য মন্ত্রাণালয় জেলা পরিষদ পার্কের উন্নয়ন কাজ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। কাজ শেষ হলে পার্ক খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষন হতে পারে।

খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারের ইনচার্জ কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, ঈদের দিন ২ হাজার ও দ্বিতীয় দিন আড়াই হাজার দশনাথী আলুটিলায় প্রবেশ করেছে। লক্ষ করেছি এখানকার মানুষরা বেড়াতে এসেছে। বাহির থেকে পর্যটক আসেনি।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্কের ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন তেরশ পর্যটক পার্কে প্রবেশ করেছে। শনিবার বন্ধ আছে আজকে আরো বাড়তে পারে।

বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমার চার দোকানে ইনভেস্ট করেছি। মানুষ বাহির থেকে দেখছে কিন্তু কিনছে না। বেচাকেনা নেই। গত বছর ভালো ব্যবসা হয়েছে। এ বছর খুব খারাপ। বেচা না হলে কষ্টকর হবে বলে জানায় জেলা পরিষদ পার্কের বার্মিজ মাকেটের দোকান মালিক টিটু চাকমা।

খাগড়াছড়ি ট্যুরিস্ট পুলিশ এসআই আবুল কাশেম বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়িতে যতগুলো পর্যটন স্পট আছে বিশেষ করে রিসাং ঝরনা, আলুটিলা ও জেলা পরিষদ পার্ক, সাজেক, মায়াবিনী লেখ, পানছড়ি অরণ্য কুঠিরে দুই বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। একটা সাদা পোশাকে আর একটা পোশাকে। সার্বক্ষণিক টহল পাটি ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তায় নিয়জিত আছি।

পর্যটন শিল্প বিষয় নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় এই বছর হোটেল ব্যবসা ভালো হয়নি। গত তিন মাসও পর্যটক ভালো ছিল না। তীব্র গরম আবার বাচ্চাদের পরীক্ষা গেল। আগের বছর আমাদের রুম পর্যটকের ভরপুর ছিল। এ বছর গতকালকে চার-পাঁটটি রুম বুকিং হয়েছে শুধু। খাগড়াছড়ি জেলাতে একশর হোটেল, মোটলে ও গেস্ট হাউস রয়েছে। সবাই আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক সহিদুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসন-পুলিশ প্রশাসনসহ সব নিরপত্তা বাহিনী প্রস্তুত।

১১৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares