শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
 তিস্তা নদী এখন মরুভুমি 

 তিস্তা নদী এখন মরুভুমি 

নীলফামারী সংবাদদাতা:-পানির অভাবে ঢেউহীন তিস্তার বুক এখন ধু-ধু বালুচড়ে পরিনত হয়েছে।নেই মাঝি মাল্লাদের হাঁকডাক ।নেই জেলেদের মাছ ধরার ব্যস্ততা।বর্ষার শেষে ডিমলা উপজেলার ১২০ কিলোমিটার নদী মরুভুমিতে পরিনত হয়েছে। ভারতে সিকিম পশ্চিম বঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে ডুকেছে তিস্তা নদী।

বর্ষাকালে বন্যা আর নদী ভাঙ্গনের কবরে পড়ে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা।ভাঙ্গনে ও প্রবল¯্রােতে ভেসে যায় ফসলি জমি বসতভিটা সহ সকল স্থাপনা। বর্ষা শেষ হতেই পানি শুকিয়ে মরুভুমিতে পরিনত হয় তিস্তা নদী।ঢেইহীন তিস্তার বুকে জেগে উঠে অসংস্য বালুচড়। নদীর পাড়ের জেলে রহিম জানান,এক সময় তিস্তায় প্রচুর মাছ ধরা পড়তো।সেই মাছ বিক্রি সংসার চালাতো ১৫ হাজার জেলে পরিবার। পানিশুন্য তিস্তায়  মাছের আকাল পড়েছে।মাছ না থাকায় অনেক জেলে তাদের পেশা পরিবর্তন করেছেন।পানির অভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠা  তিস্তা এখন শুকিয়ে মরুভুমিতে পরিণত হয়েছে।

ভারতের এক তরফা পানি নিয়ন্ত্রণের কারনে বাংলাদেশের অংশে তিস্তা এখন মৃত্য প্রায়। ফলে তিস্তা অববাহিকায় জীবও বৈটিত্র্য হুমকির মুখে।যার ব্যাপক প্রভাব পড়ে আমাদের দেশে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তারপর বাংলাদেশকে পানি দেয় ভারত।বর্ষাকালে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওযায় তিস্তা এলাকায় বন্যা হয় । বিশেষ করে ডিমলা উপজেলার মানুষ বেশী ক্ষতির সন্মুখিন হয়।পক্ষান্তরে শুস্ক মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী পানি মেলেনা। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত অত্র এলাকার মানুষ ।তিস্তায় নানান প্রজাতির মাছের মধ্যে জনপ্রিয় বৈরালী,বুরাল মাছ যা দেশের অন্যান্য এলাকায় অপ্রতুল।রাষ্ট্রীয় অতিথিরা এলে আপ্যায়নের মেনুতে থাকতো তিস্তা নদীর এই সুস্বাদু মাছ। তিস্তার পানির অভাবে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে এসব মাছ। মাঝি সাইদুল ইসলাম জানান, বর্ষাকালে খেয়াপাড়ে জেলেদের নৌকা ভাড়া দিয়ে দৈনিক ৫ থৈকে ৬শত টাকা আয় হত।কিন্ত এখন পানিশুন্য তিস্তা এখন মরা খাল।

উত্তর সিকিমে সোলাস হ্রদ থেকে শুরু করে  হিমালয় পর্বতের বুক চিরে ভারতের জলপাইগুড়ি হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার  পূর্ব ছাতনাই দিয়ে এ দেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী।৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১২০ কিলোমিটার পড়েছে,ডিমলা উপজেলায়।পানির অভাবে ঢেউহীন  তিস্তান বুক এখন ধু-ধু বালুচড়। সব কিছু মিলিয়ে তিস্তা পাড়ের মানুষের জীবন জীবিকা থমকে গেছে। মাঝি আইনুল জানান,আগে নদীতে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার ভালোই চলতো।

ডিমলা উপজেলা পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দূল লতিফ খান জানান পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করে তিস্তার যৌবন ফেরাতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। ডিমলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম জানান, তিস্তা পাড়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে বন্যার সময় বাড়ী-ঘড় ফসলি জমি হারিয়ে বাধেঁর উপর আশ্রয় নেয় আবার বর্ষা বের হলে নদী ধু-ধু বালুচড়ে পরিনত হয় এসব মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান,নদীতে মাত্র ১ হাজার কিউসেক পানি রয়েছে। যা দিয়ে ২৫ হাজার হেক্টও জমির চাষাবাদ হচ্ছে। পানি কম থাকায় নিয়মানুযাযী মুর ¯্রােত ধারার ৪৪টি জলকপাট বন্ধ রয়েছে। ফলে পানি শুন্য রয়েছে মুল নদী।

৯২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares