শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংসদ সদস্য মুক্তার উদ্যোগে পঞ্চগড়ে তিন উপজেলায় তিন লাখ বৃক্ষরোপনের কর্মসূচির উদ্বোধন

সংসদ সদস্য মুক্তার উদ্যোগে পঞ্চগড়ে তিন উপজেলায় তিন লাখ বৃক্ষরোপনের কর্মসূচির উদ্বোধন

তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড় জেলার তিনটি উপজেলায় মাসব্যাপি ৩ লাখ বৃক্ষরোপন কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেছেন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা। শনিবার বেলা ১১টায় তেঁতুলিয়ার পুরাতন বাজারে মহানন্দা পার্কে বেলুন ও গাছ লাগিয়ে এ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়াও তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর ধারে মুক্তাঞ্চল পার্কে বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপন করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো.জহুরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খাঁন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহবুবুর রহমান, এমপি পতœী মেজর (অব.) কাজী মৌসুমী, ব্র্যাকের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র পরিচালক কেএএম মোর্শেদ, সহযোগি পরিচালক আব্দুস সালাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মতিন, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সুজয় কুমার রায়, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলীসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠার কর্মকর্তা, রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও সুধীজনসহ আরো অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা জলবায়ূর পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব থেকে জীব বৈচিত্র রক্ষা, মরুময়তা রোধ, সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যেমে পর্যটনে মানুষকে আকৃষ্ট দুর্যোগ থেকে রক্ষায় সবুজায়ন ভাবনা ও প্রাণ প্রকৃতি বাঁচাতে পঞ্চগড়-১ আসনের তিনটি উপজেলায় ২৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৬৬ প্রজাতির তিন লাখ গাছ লাগানোর উদ্যোগ ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। শনিবার পয়লা আষাঢ় ১৫ জুন বৃক্ষরোপণ উৎসবের আয়োজন করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ৬৬ প্রজাতির দুই লক্ষাধিক গাছের চারা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম অগ্রাধিকার ছিল “পরিবেশ ও পর্যটন”। পঞ্চগড় একটি পর্যটন এলাকা সেহেতু আমরা রাস্তার ধারে শোভাবর্ধনকারী গাছ যেমন শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচ‚ড়া, রাধাচ‚ড়া, জারুল, সোনালু, ফলজ, বনজ এবং ঔষধি বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি করতোয়া, মহানন্দা, ডাহুক,চাওয়াই, তালমা,নাগর,বেরং, ভেরসাসহ পঞ্চগড়ের সকল নদীর পাড়ে পাখির খাবার উপযোগী বুনো ফলের গাছও লাগাতে চাই। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, আমাদের তিনটি উপজেলা পরিষদ, ২৩ টি ইউনিয়ন পরিষদ, সরকারি-বেসরকারি সকল দপ্তর, আওয়ামীলীগ ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, সকল স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা,সর্বোপরি দল-মত নির্বিশেষে সকল নাগরিক আমাদের এই উদ্যোগে ইতিমধ্যে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “যখন এক ব্যাক্তি স্বপ্ন দেখে তখন এটি নিছক স্বপ্ন। যখন সবাই মিলে স্বপ্ন দেখে তখন এটি হয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের শুভসূচনা”। আমরা শুধু বৃক্ষরোপণই করেই দায়িত্ব শেষ করি। কিন্তু আমরা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করি না। গাছ লাগালেই রক্ষনাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করতে হবে। চলতি বছর পঞ্চগড়-১ আসনের সকল শিক্ষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সড়ক-মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়ক, স্কুল কলেজ, নদীর ধার, পুকুরের পাড়ে এই বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা হবে। যাতে গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে ব্যক্তি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সকলের মধ্যে শান্তির বার্তা নিয়ে আসে, যা সমাজকে বহুগুণে সমৃদ্ধ করবে। এছাড়া সৌন্দর্য ছড়ানো সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানো হচ্ছে। গাছ বাচঁলে প্রাণ বাচবে। পরিবেশ, প্রকৃতি ও প্রাণীকুলকে বাঁচিয়ে রাখতে গাছ লাগানো ও পরিচর্যায় করার অনুরোধ জানান তিনি। এ কর্মসূচি চলবে পুরো আষাঢ় মাস।
তিনটি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, আশ্রয়ন প্রকল্প, সড়ক -মহাসড়কে কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। এসব বৃক্ষ রক্ষণাবেক্ষনে জৈব সার, কীটনাশক, ফেন্সিং, বাঁশের খুটি দিয়ে বেধে রাখা হবে। প্রতিবছর এ কর্মসূচি চলবে। আগামী বছর যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি গাছ লাগিয়ে রক্ষা করতে পারবে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
সংসদ সদস্য হিসেবে দ্বিতীয় এবং চলতি অর্থবছরের চতুর্থ বরাদ্দ হিসেবে কাবিটা কর্মসূচির ৫০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।এই পুরো বরাদ্দ তিনি তিনটি উপজেলার ২৬ টি গ্রামীণ সড়ক সংস্কার ও বৃক্ষ রোপনে ব্যয় করার জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। এই উদ্যোগ সফল করতে তিনি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তিন উপজেলায় রোপনের জন্য সাত প্রজাতির দুই হাজার একশ চারা সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

২৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares