সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজারহাট প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পৈত্রিক ভিটেমাটি ফেরত পেল দুই এতিম

রাজারহাট প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পৈত্রিক ভিটেমাটি ফেরত পেল দুই এতিম

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : রাজারহাটে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পৈত্রিক ভিটেমাটি ফেরত পেয়েছে দুই এতিম মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেবিচরণ গ্রামে

জানা গেছে, প্রায় ৯বছর পূর্বে উক্ত গ্রামের একরামুল হক মৃত্যু বরন করেন। অল্প দিনের মধ্যে তার স্ত্রী আফরোজা বেগম দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন স্বামীর ঘরে চলে যান। এতে করে ওই দম্পত্তির এগারো বছর বয়সী কন্যা রেখা বেগম এবং সাত বছর বয়সী কন্যা রেবেকা আক্তার আইভি এতিম ও অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। তাদের বাবার মৃত্যুর প্রায় ৪বছর পর বিয়ে হয় রেখা বেগমের। রেবেকা চাচার বাড়িতে থাকলেও তাদের নির্যাতনে একদিন একই উপজেলার রতিরাম কমলওঝাঁ গ্রামে নানার বাড়িতে চলে যায় । গত প্রায় ২বছর পূর্বে সেখানে থেকেই রেবেকার বিয়ে হয় একই উপজেলার নদী ভাঙন কবলিত কালিরহাট নামক স্থানে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই স্বামীর বসত ভিটে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে অন্যের একখন্ড জমিতে ঘর তুলে কোনরকম ভাবে দিনাতিপাত করতো রেবেকার পরিবার। এবছর জমির মালিকের চাপে জমি ছেড়ে দিয়ে গৃহহারা রেবেকা (১৬) এবং তার বড় বোন রেখা বেগম (২০) স্বামী সহ বাবার বাড়িতে চলে আসেন। তবে তাদের চাচা ইয়কুর আলী সহ ওই পরিবারের লোকেরা তাদেরকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়নি। ১৯দিন তারা অন্যের বাড়িতে থেকে পৈত্রিক ভিটেমাটি উদ্ধারের দাবিতে গ্রামের মাতব্বর ও রাজনৈতিক নেতাদের স্বরনাপন্ন হন।

এরই মধ্যে রাজারহাট উপজেলায় নবাগত ইউএনও কাবেরী রায় যোগদানের পর গত মঙ্গলবার সাংবাদিদের সাথে মত বিনিময় সভায় একজন সাংবাদিক বিষয়টি ইউএনও’কে অবহিত করেন। এরপ্রেক্ষিতে ইউএনও কাবেরী রায় নোটিশের মাধ্যমে বুধবার সকালে উভয় পক্ষকে তার অফিসে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেন। এরপরও ইয়াকুব আলী ওই সভায় অনুপস্থিত থাকেন।

পরে বুধবার সন্ধ্যার পূর্বে ইউএনও কাবেরী রায়,রাজারহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী,ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুল ইসলাম সাবু এবং থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লা-হিল জামান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টায় এতিম দু’বোনকে নিজের পৈত্রিক বাড়িতে তুলে দেন। এসময় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

পৈত্রিক বাড়িভিটে ফেরত পেয়ে রেখা ও রেবেকা বেগম বলেন, অনেক জায়গায় গেছি কেউ আমাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি উদ্ধার করে দিতে পারেননি। উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহন না করলে হয়তো আজও অন্যের বাড়িতে থাকতে হতো।

তবে রেখা ও রেবেকার চাচা ইয়াকুব আলী তাদের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় বলেন,সমন্বিত প্রচেষ্টায় কঠিন কাজও সহজে করা যায়,এটি তার দৃষ্টান্ত।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন,বিষয়টি দুঃখ জনক,শুনেই খারাপ লেগেছে এজন্য আমি নিজেও গিয়েছি।

২৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS