বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লালপুরে থানা হেফাজতে আসামী নির্যাতনের অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ আদালতের

লালপুরে থানা হেফাজতে আসামী নির্যাতনের অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ আদালতের

ইসাহাক আলী, নাটোর, ১৪ জুলাই -নাটোরের লালপুর থানা হেফাজতে আসামীদের নির্যাতনের অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অফিসার ইনচার্জ এবং দুই উপপরিদর্শকসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারকে মামলা দায়ের করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য পুলিশ সুপারকে আদেশ দেন লালপুর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন। মামলা দায়ের করে ১৫ জুলাই তারিখের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নাটোরের পুলিশ সুপারকে আদেশও দেন আদালত।
লালপুর আমলী আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের কাছে দেয়া জবানবন্দীতে আসামীরা অভিযোগ করেন যে, বড়াইগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব, লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. উজ্জল হোসেন, উপপরিদর্শক মো. জাহিদ হাসান, উপপরিদর্শক ওমর ফারুক শিমুল এবং অপর এক কন্সটেবল তাদেরকে নির্যাতন করেছেন।
বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ বিশ্বাস আরো বলেন, বুধবার লালপুর থানা পুলিশ অটোরিক্সা ছিনতাই মামলায় মোঃ সোহাগ হোসেন, মোঃ শামীম মোল্লা, মোঃ সালাম, এবং মোঃ রাকিবুল ইসলাম রাকিব নামে চার আসামীকে আদালতে পাঠায়।
এদের মধ্যে আসামী মোঃ সোহাগ হোসেনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোঃ ওমর ফারুক শিমুল আবেদন করেন। অন্যান্য আসামী মোঃ শামীম মোল্লা, মোঃ সালাম, এবং মোঃ রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণের জন্য উপস্থাপন করেন। এসময় চার আসামীর মধ্যে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বাদে তিনজনই থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
আসামী মোঃ সোহাগ হোসেন স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি না হয়ে আদালতের কাছে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
আসামীদের বক্তব্য ও শরীরে দৃশ্যমান আঘাত পর্যালোচনা করে সমস্ত আঘাত তাদের শরীরের সংশ্লিষ্ট অঙ্গে পরিলক্ষিত হওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আসামীরা পুলিশী নির্যাতনের অভিযোগ পেশ করলে থানা হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হওয়া আসামীদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন।
বুধবার আসামীদের মেডিকেল পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করার জন্য নাটোরের জেল সুপারকে এবং নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে আসামীদেরকে শারীরিক পরীক্ষা করে তাদের শরীরে থাকা জখমের কারণ এবং জখমের সুনির্দিষ্ট বর্ণনা দিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রস্তুত করে আদালতে উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
নাটোরের পুলিশ সুপারকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার নিম্নে নয় এমন কর্মকর্তাকে তদন্তের ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন আদালত।
এবিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, অটোরিক্সা ছিনতাই মামলার আসামীদের ধরতে গেলে তারা দৌড় দিয়ে পড়ে গিয়ে দাগটাগ হয়েছে। পরে আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। আদালতের আদেশের কথা শুনেছি। আদেশের কপি পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS