শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লাল-সবুজের পতাকায় জাতিগত কোনো বিভেদকে কোনোভাবেই আগাতে দেওয়া যাবেনা .. রসিক মেয়র মোস্তফা

লাল-সবুজের পতাকায় জাতিগত কোনো বিভেদকে কোনোভাবেই আগাতে দেওয়া যাবেনা .. রসিক মেয়র মোস্তফা

স্টাফ রিপোর্টার :; জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) মেয়র মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, আমি চাই আমাদের এই সম্প্রীতির বন্ধনটা অটুট থাক, আরো শক্তভাবে। আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে বির্নিমাণ করবো। তার কারণ হলো স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে, সেটা শুধু মুসলমানদের রক্তের বিনিময়ে হয়নি, এখানে হাজারো লাখো আমাদের হিন্দু ভাই-বোনের পরিবারে রক্তের বিনিময়ে আজকে এই লাল-সবুজের পতাকা। স্বাধীন সার্বভৌম্য বাংলাদেশ। এই লাল-সবুজের পতাকায় জাতিগত কোনো বিভেদ বা বিষফোরাকে কোনোভাবেই আগাতে দেওয়া যাবেনা। যখনেই আগানোর চেষ্টা করবে, আমরা হিন্দু মুসলমান ঐক্য হয়ে তা বিনাশ করার চেষ্টা করবো। এটা কিন্তু যুগে যুগে যেমন অমানুষের জন্ম হয়েছে, মা দূর্গার সময় অশুরের জন্ম হয়েছে, ঠিক তদরুপ এখনো কিন্তু মানুষ বেশে অশুর তারা কিন্তু সমাজে ঘোরা ফেরা করে, তারা এই সম্পর্কটা বিচ্ছিন্ন করতে চায়। হিন্দু মুসলিমকে মূখমূখি দ্বার করাতে চায়। আমরা যতদিন বেঁেচ আছি এটা আমরা করতে দেবো না। আমরা সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এই সম্প্রদায় সম্প্রীতির বাংলাদেশকে একটি সম্মানের জায়গায় রাখতে চাই, আমাদের আজকের দিনে শপথ। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের গুষ্টিগতভাবে আমাদের যারা নেতৃত্ব দেয়, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়, তাদেরকে সম্মানের জায়গায় নিয়ে রাখা, এটা কিন্তু প্রত্যেকটা ধর্মের মানুষের দায়িত্ব।

রংপুরে এই প্রথম বাংলাদেশ ব্রা²ণ পুরোহিত ঐক্য পরিষদ, রংপুর জেলা শাখা আয়োজনে গত সোমবার (২৯শে মে থেকে ১লা জুন) ৪দিন ব্যাপী কেন্দ্রীয় দখিগঞ্জ শ্মশানে আয়োজিত শীব স্বস্ত্যয়ন (যজ্ঞ) ও ধর্মীয় আলোচনা এবং ১৬ প্রহর ব্যাপী শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দের অষ্টকালীন লীলা কীর্ত্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।

রসিক মেয়র মোস্তফা বলেন,আমরা এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টাণ এক সাথে বাস করছি। অন্য ধর্মের প্রতি আমার যথাযোগ্য ধর্ম এবং আমার যে সম্মান, সেটা কিন্তু থাকতে হবে। যদি না থাকে তাহলে এই অসম্প্রদায়িক চেতনা থাকবে না। আমরা চাই বিশেষ করে আমাদের সনাতন ধর্মের মানুষ, মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ অধিকাংশ, খ্রীষ্টাণ সম্প্রদায়ের মানুষ সকলকে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমার কাছে কোনো ধর্মের কোনো ব্যবধান নেই। আমি মসজিদকে যেভাবে দেখি, যেভাবে কবরস্থানকে দেখি, সেভাবে মন্দিরকে দেখি, সেভাবেই শ্মশানকের দেখি। আমি খ্রীষ্টাণ সম্প্রদায়কে দেখি। প্রত্যেকটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কালচারাল অনুষ্ঠানে যেটাই হোক না, মেয়র কিংবা কাউন্সিলর যারাই আছেন তাদের উপস্থিত হওয়া একটা নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়বে। এই মানুষ গুলোর ভোটে নির্বাচিত হয়ে আজকে আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছি। এই মানুষগুলো যদি আমাকে ভোট না দিত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, তাহলে কিন্তু আমি এ জায়গায় যেতে পারতাম না। সেই মানুষগুলো যদি যেকোনো সময় আমার কাছে তাদের মেসেজগুলো দেয়, আমার যত কাজেই থাকনা কেন, আমি ঠিক সময়মত এই অনুষ্ঠানে আসবো, এটা আমার দায়িত্বে মধ্যে পরে।

বাংলাদেশ ব্রা²ণ পুরোহিত ঐক্য পরিষদ, রংপুর জেলা শাখার সভাপতি শ্রী ধীমান ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানের বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর জেলা শাখার সভাপতি রামজীবন কুন্ডু। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর জেলার সহ-সভাপতি ভবতোস সরকার বাচ্চু ও পাভেল চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রফিকুল আলম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর জেলার সহ-সভাপতি অরুপ কুমার দত্ত, অধ্যাপক নির্মলেন্দু গোস্বামী।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আর্ন্তজাতিক আলোচক সপ্ততীর্থ ও রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজে অধ্যাপক শ্রী পষ্কোজ ভাদোর। এর আগে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শীব স্বস্ত্যয়ন (যজ্ঞ) অনুষ্ঠিত হয়।

৫৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares