শনিবার, ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পঞ্চগড়ে পুশইন করা ২১ নারী /পুরুষ-শিশুকে পরিবারের হাতে ফেরত

পঞ্চগড়ে পুশইন করা ২১ নারী /পুরুষ-শিশুকে পরিবারের হাতে ফেরত

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশে পুশইন করা আটক নারী/পুরষ ও শিশুসহ ২১ জনকে তিন দিনের মাথায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
শনিবার ২৪ মে বিকেলে পঞ্চগড় সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার ২১ মে ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে নারী/পুরুষ ও শিশু সহ ২১ জনকে পুশ ইন করে ভারতীয় বিএসএফ। এর পর এলাকাবাসী তাদের দেখে বিজিবিকে খবর দিলে বিজিবি তাদের আটক করে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করে।
এসময় আটক থাকা আলেয়া বেগম বলেন, আমরা ভারতে বসবাস করে বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত ছিলাম। এর মাঝে গত ২১ মে ভারতীয় পুলিশ আমাদের গুজরাট এলাকা থেকে আটক করে উড়োজাহাজে কলকাতা নিয়ে আসে। পরে কলকাতা থেকে বাসে করে এনে বিএসএফ ভারতের সীমান্তে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এর পর বিজিবি আটক করে আমাদের। গত তিনদিন ধরে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ছিলাম সবাই। পরিবারের সদস্যরা এসে আমাদের খুলনায় নিজ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। খুব ভালো লাগছে, আজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি পরিবার নিয়ে ভারতে কিটনাশক কোম্পানিতে কাজ করতাম। এর মাঝে আমাদের সবাইকে বাড়ি থেকে তুলে নেয় ভারতীয় পুলিশ। পরে আমাকে আলাদা স্থানে ছেড়ে দেয়। এদিকে স্ত্রী সন্তানের কোন খবর না পেলেও হঠাৎ বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ছবি প্রচার হলে তাদের ছবি দেখতে পাই। এদিকে পঞ্চগড়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে আজ পরিবারকে নিতে এসেছি।
এসময় পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান ও হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই আলম উপস্থিতি ছিলেন।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ২১ জন আটক হওয়ার পর ইউএনও স্যার আমাকে ফোন করে তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে রাখার বিষয়ে বলে। আমি তাদের থাকার ও খাবার ব্যবস্থা করি। তিনদিন পর তাদের অভিভাবক আসায় প্রশাসনের মাধ্যমে সবাইকে পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। শিশু সহ সবাই তাদের নিজ পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছে।
পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, আইনি ভাবে আমরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছি, তারা বাংলাদেশী। এ বিষয়ে ঘটনার দিন থানায় জিডি করা আছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা আসায় সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে তুলে দেয়া হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, ডিসি স্যারের নির্দেশে নারী/পুরুষ ও শিশু সহ আটক ২১ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়। এর মাঝে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাদের পরিবার আসায় তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

৮৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares