শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঘোড়াঘাটে আমের মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ

ঘোড়াঘাটে আমের মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ

৬৩ Views

আজহারুল ইসলাম সাথী ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গাছে গাছে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমের মুকুল। মকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাম্পার ফলনের আশা করছে বাগান মালিকরা। আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ উপজেলায় গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। গ্রামগঞ্জে সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজ¯্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করছে আমচাষী ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। প্রাণবন্ত প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে এ যেন বাগান মালিকদের সোনায় সহাগা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আম উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ ধারণা করছেন। অন্যদিকে আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা । চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ, ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা বাতাস। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত গন্ধে মুকুলের আশেপাশে মৌমাছির আনাগোনা। অনেকেই মুকুল রক্ষা করতে বাগান মালিকরা পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে গাছে গাছে ওষুধ স্প্রে করতে দেখা যাচ্ছে। অনেক আমবাগান মালিক বলছেন এ বছর আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর এ উপজেলায় ৮ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে ২৫৯টি আমের বাগান রয়েছে। এতে ৭৫ হাজার ৯৫০ মেট্রিক ট্রন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ফজলি ৯৮৫ হেক্টর, আশ্বিনা ১ হাজার ২’শ ৩০ হেক্টর, ল্যাংড়া ৩৯৫ হেক্টর, খিরসাপাত ২৫৫ হেক্টর, গোপাল ভোগ ২’শ ২০ হেক্টর, আমরুপালি ২’শ ৯০ হেক্টর, মল্লিকা ৫ হেক্টর, লক্ষণভোগ ১৯৫ হেক্টর, বোম্বাই ১৫ হেক্টর, উন্নত জাত ৩৭৫ হেক্টর ও গুটি ২৭৫ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে। আম বাগান মালিকরা বলেন, বর্তমানে আবহাওয়া ভাল থাকায়, বাগানের গাছে গাছে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। তার বাগানে গত কয়েক সপ্তাহ থেকে বেশির ভাগ গাছে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। পোকা-মাকড় ও অন্যান্য রোগবালাই থেকে মুকুল রক্ষা করতে প্রাথমিক পর্যায়ে পরিচর্যা শুরু করা হয়েছে। বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তারা ধারণা করছেন। আম ব্যবসায়ী করিম ও দিলজার রহমান জানান, আম বাগানে মুকুল আসার পর থেকেই তিনি গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুলে রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন। তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে বলে তারা জানান। তারা বলছেন, বলছেন, বাগানের অধিকাংশ গাছেই এর ইতি মধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে ্রপ্রস্ফুটিত হয়েছে। আম বাগানে এবার আগেভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগে ভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের উৎপাদন বাড়ছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত উপজেলার আম গাছগুলো মুকুল এসেছে শতকরা ১০% জমিতে। উপজেলা কৃষি বিভাগ ও উপসহকারী কৃষি সহকারী কর্মকর্তারা কৃষকদের মোট ৩টি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে মুকুল আসার আগে ও পরে এবং মুকুলমটর দানা বাধার সময় একটি ছত্রাকনাশক ও একটি কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যাতে হপার পোকাসহ অন্যান্য রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমন না হয়। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৫০ মেট্রিকট্রন। প্রকৃতিক অনুকুলে থাকলে এ বছর আমের বাজারে ইতিবাাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

Share This