শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পঞ্চগড়ে হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চালক পুলিশের চাকরী দেয়ার নামে প্রতারণা

পঞ্চগড়ে হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চালক পুলিশের চাকরী দেয়ার নামে প্রতারণা

পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় পুলিশের চাকরি দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ায় অভিযোগ উঠেছে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিভাগীয় ভাবে তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল জুয়েলকে বর্তমানে আটক রেখে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খাঁন নিশ্চিত করেন। এদিকে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণ করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে হাইওয়ে পুলিশের রংপুর সার্কেল এসপি জাহিদ চৌধুরী তদন্তে গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকার থানার পরিচ্ছন্ন কর্মী ভজনপুর ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর এলাকার নাজিরকে পুলিশে চাকরি দেয়ার লোভ দেখায়। এর মাঝে হাইওয়ে থানার পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজিরের কাছ থেকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন অতিবাহীত হয়ে গেলেও গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের কোন হুদিস না থাকায় থানায় অবহিত করে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া রিজিয়নের এসপি বরাবর অভিযোগ করেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির। এদিকে অভিযোগের পর জুয়েলকে প্রথমে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করার পর রংপুর সার্কেল অফিসে রাখায় হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্তে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রংপুর সার্কেল জাহিদ চৌধুরী সরেজমিনে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানায় এসে অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নিয়ে যান।
অভিযোগকারী পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির বলেন, গাড়ি চালক জুয়েল খন্দকার প্রায় সময় পুলিশের চাকরি নিয়ে দিবে বলে আমাকে প্রতিনিয়ত বলতো। পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজিরকে জুয়েল বলে তার পঞ্চগড় পুলিশ সুপারসহ উপরের সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি বললে তোমার চাকরী হয়ে যাবে। বিভিন্ন ভাবে লোভ দেখিয়ে কাগজপত্র চেয়ে ৭০ হাজার টাকা প্রথমে নেয়। এ ভাবে পর্যায়ক্রমে আমিও তাকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেই।
একসময় চাকরি হয়েছে বলে আমাকে ঢাকায় নিয়ে মাঝ রাস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। কিন্তু আর কোন চাকরির খবর না থাকায় আমি অভিযোগ করি।
তেতুলিয়া ভজনপুর এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, পুলিশে চাকরি দেয়ার নামে থানায় কর্মরত বাবুর্চি বিলকিস বেগমের কাছে ১৮ হাজার টাকা, সরকারি রেশন দেয়ার নামে ভজনপুর বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী সুবলের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যবসায়ী জিয়ার কাছ থেকে বাবার অসুস্থ্যতার কথা বলে হাওলাদ ১০ হাজার টাকা, শালবাহান রোডের এক বাঁশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকাসহ আরও বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চালক পুলিশ কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে।
তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খাঁন জানান, গাড়ি চালক জুয়েল খন্দকারকে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করে রংপুর সার্কেল অফিসে রাখা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে রংপুর সার্কেল এসপি এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। অভিযোগারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নিচ্ছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সকল প্রসেসিং-এর মাধ্যমে তার চাকরিও চলে যাবে। টাকা ফেরতের বিষয়টি এসপি স্যার বলতে পারবেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, বিভাগীয় ভাবেও মামলা হবে। এদিকে পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার কথা বললেও জুয়েল খন্দকার ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার কথা বলেছে। এখন পর্যন্ত একটি অভিযোগই করা হয়েছে এবং সেটি তদন্তে রয়েছে। বাকি অভিযোগকারীগুলো দুই এক দিনের মধ্যে অভিযোগ পাঠাতে পারে বলে জানায়।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের রংপুর সার্কেল এসপি জাহিদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফেনে বলেন, অভিযোগ পাওয়া পর তদন্ত চলছে। বর্তমানে অভিযুক্ত ক্লোজড রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

১৯৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares