সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পঞ্চগড়ে্ এই  গ্রামপুলিশের খুটির জোর কোথায়

পঞ্চগড়ে্ এই গ্রামপুলিশের খুটির জোর কোথায়

পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মনের বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন। অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছেন। ওই গ্রামপুলিশ হরদেব এর খুটির জোর কোথায় জানতে চায় এলাকাবাসি।
অভিযোগে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পাশ্বে ৬নং ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা ওয়ার্ডে ৭১ এর গ্রাম উন্নয়নে সরকারি ঘর হতে যাচ্ছে। ওই ৭১ গ্রামে গরীব দুঃখী সাধারণ মানুষকে আবাসিক ঘর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন গরীব অসহায় মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে গ্রাম পুলিশ হরদেব। এলাকাবাসি আরো জানায় জুগিকাটা এলাকায় এক কোম্পানি জমি খরিদ করে সোলার পাওয়ার প্লান্ট হচ্ছে এই প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছে টাকা নিয়েছে গ্রামপুলিশ হরদেব।
এদিকে কৃষ্ণনগর ওয়ার্ডে রোহিতা রানী নামে এক স্বামী পরিত্যাক্ত মহিলাকে আশ্রয়নের ঘর দেয়ার নাম করে গ্রামপুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন গত ৬ আগস্ট ৩১ হাজার টাকা নেন।
যা পরবর্তীতে আত্মসাৎ করে সাধারণ মানুষকে ঘর ও সরকারি সুযোগসুবিধা না দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ করে অনেকে।
এদিকে ঘর না পেয়ে স্বামী পরিত্যাক্ত রোহিতা রানী অসহায় হয়ে পড়লে এলাকাবাসি বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করে।
পরে গত ৮ আগস্ট মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে হরদেবের উপর চাপ প্রয়োগ করলে ওই মহিলার কাছে থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে। ওই নারীকে ৩১ হাজার টাকা ফেরত দেয় গ্রাম পুলিশ। তবে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা মূলক কর্মকান্ড করায় এবং টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রামপুলিশ হরদেব চন্দ্রের বিচার দাবী করেন এলাকাবাসী।
অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় স্বামী পরিত্যাক্ত রোহিতা রানীর সাথে। তিনি বলেন, আমাকে খবর দেয় সরকারি ঘর দেয়া হবে। এর পর আমার কাছে টাকা চায়। স্বামী না থাকায় কোন ভাবে ৩১ হাজার টাকা ম্যানেজ করে ওই গ্রামপুলিশকে দেই। কিন্তু ঘর পাওয়াতো দূরের কথা কোন খবরই পাই নি। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যেমে চেয়ারম্যানকে জানালে সে টাকা ফেরত দেয়।
সাদেকুল ইসলাম, আব্দুল আলী, এনামুল হকসহ আরও অনেকেই অভিযোগ করে বলেন,হরদেব চন্দ্র বর্মন সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছে অবৈধভাবে টাকা নিয়েছে। যার কোন হিসেব নেই। অভিযোগ করলে রোহিতা রানীর টাকা ফেরত দেয় সে। তবে তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার জন্য আমরা তার বিচার দাবী করছি। একই দাবী তুলেন অভিযোগকারী অন্য সদস্যরাও।

এ বিষয়ে গ্রামপুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন বলেন,আমি তার কাছে টাকা নিয়েছি অন্য হিসেবে। ওই মহিলা ৩১ হাজার টাকা দাবী করেছিলো চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পুরো টাকা ফেরত দেই।
মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন,এর আগে এক মহিলার টাকা নিয়েছিল গ্রামপুলিশ হরদেব মহিলাকে টাকা ফেরৎ দিয়েছে। আবারও অভিযোগ এসেছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসফিকুল আলম হালিম বলেন,একটি গনস্বাক্ষর করা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আটোয়ারী সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

২৩০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares