ভোলার-চরফ্যাশনে বেড়িবাঁধ নেই ১৩ কিলোমিটার, ঝুঁকিতে দেড় লাখ মানুষ
ভোলা প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় কিংবা নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে ভাঙছে চরফ্যাশন উপজেলার অরক্ষিত বেড়িবাঁধ। ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলের প্রায় দেড় লাখ মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া বাঁধহীন এলাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে চিংড়ি ঘের, মাছের পুকুর, জমির ফসলসহ বসতবাড়ি। সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারো পরিবার।
নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, সাগর উপকূলীয় অঞ্চলে জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দুর্যোগ মৌসুম। আর এই দুর্যোগ মৌসুম মানেই উপকূলবাসীর জন্য বন্যা কিংবা জলোচ্ছ¡াসের আতঙ্ক।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (ডিভিশন-২) সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলায় ৮৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। অরক্ষিত ছিল ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে মুজিবনগরে সাড়ে ১৫ কিলোমিটার এবং কুকরিমুকরি ইউনিয়নে ১৪ কিলোমিটারের কাজ চলমান। তবে এখনো বাঁধহীন রয়েছে ১৩ কিলোমিটার।
ঘোষের হাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীপাড়ের বাসিন্দা বশির চকিদার বলেন, গবাদিপশু, চাষের জমি, এমনকি পরিবার পরিজনসহ সবকিছুই বিপদের মুখে রেখে বসবাস করতে হয় নদীর তীরের মানুষদের। কত ঝড়-বন্যা আর ভাঙন আমাদের নিত্যসঙ্গী। ভাঙনে ধরা গ্রামের মানুষগুলোকে বারবার বসত পাল্টাতে হয়। এমনিতেই গরিব, তার ওপর আবার বসতভিটা, চাষের জমি, থাকার ঘরও খোয়া যায় ভাঙনে। তাই অভাব কাটে না। বেড়িবাঁধ থাকলে হয়তো এমন ক্ষতি হতো না।
একই এলাকার কবির মাঝির বলেন, পাঁচ একর জমির ওপর বাড়ি ছিল তাঁর। নদী ভাঙনে এখন সব হারিয়ে সর্বস্বান্ত। কবির মাঝির সাতজনের সংসার চালাতে নদীতে মাছ ধরতে নামতে হয়েছে অনেক আগেই। অথচ একসময় নিজের জমিতেই আবাদ করে সংসার চালাতেন। তিনি বলেন,বর্ষা মৌসুমে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করে। বেড়িবাঁধ না থাকায় বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে। গত বছরের এমন দিনে জোয়ারের পানিতে হাঁস-মুরগি ও দুইটা ছাগল ভেসে গেছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (ডিভিশন-২)-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন,চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া ২ কিলোমিটার, বাবুরহাট ২ কিলোমিটার, গাছির খাল ১ কিলোমিটার, ঘোষের হাট থেকে কাশেম মিয়ার বাজার ২ কিলোমিটার এবং মুজিবনগর ছয় কিলোমিটার বাঁধহীন রয়েছে। ভাঙন প্রবণ এলাকায় বাঁধ মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। বর্ষা শেষে ওই স্থানে ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে।