শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলায় প্রতিদিন কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি,জড়িত কর্মকর্তারা

ভোলায় প্রতিদিন কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি,জড়িত কর্মকর্তারা

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় পহেলা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা, বিক্রি, ক্রয় ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকলেও শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে নাছির মাঝি ঘাটসহ ভোলার শতাধীক ঘাটে হাক-ডাক ও উৎসবমুখর পরিবেশে লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন দালালেরা। এসব করা হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে। এর সাথে জড়িত আছেন মৎস্য বিভাগের কিছু কর্মকর্তারা বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষ দর্শী ও জেলেরা। শধু দলীয় জেলেরা এ মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যার সাথে সাথে শত শত জেলেরা-বস্তা,কনটেনার ভরে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকার মাছ দালালদের বাক্সে এনে ডেলে দিলেই দালালেরা হাক-ডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। ডাকের মাধ্যমে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। এসব মাছ পাইকারেরা ঝুড়ি করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন বলে জেলেরা জানান। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা তাদের নির্দিষ্ট করা বাসা-বাড়িতে বিক্রি করেন, এ মাছের মধ্যে ছোট-বড় ইলিশই বেশী। এসব মাছ ধরা হচ্ছে মৎস্য বিভাগের নিয়োগ করা মাঝি, ইউনিয়ন নেতা, নৌ-পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে। সপ্তাহে তিন দিন- বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে অবাধে নিধন করা হচ্ছে ইলিশ। এসব ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন মৎস্য বিভাগের নিয়োগ করা মাঝি-শহিদ, বশির, ইয়াছিন ও লিটনসহ অনেকে। জেলেদের ধরা মাছ বিক্রি করার পরে অর্ধেক টাকা রেখে দিয়ে সংশ্লিষ্টদের মাঝে রাতেই বাগ করে দেয়া হয় বলে জেলেরা জানান।
স্থানীয়রা জানান, নাছির মাঝি ঘাটে- সোহেল পাটাওয়ারী, নুরুদ্দিন, শাহে আলম, কাঞ্চন, ফজলু, রিপন হাং, লিটন, বাবুল, মাইনুদ্দিন, মনির, খালেক ও জাকির মেম্বার দালালি করে সকাল-বিকাল দুইবার মাছ বিক্রি করেন। বৃহস্পতি,শুক্র ও শনিবার তিন দিন মৎস্য বিভাগের কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মেঘনার কোন স্থানে ও মাছ ঘাটে আসেননা বলে জানান যে সব জেলেরা মাছ ধরার সুযোগ পাননা। সপ্তাহে ৩দিন-বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার জেলেরা মাছ ধরে, আর এই মাছ বিক্রির টাকা পদবী অনুযায়ী ভাগ করা হয়। ৩দিনে এক একটি মাছ ঘাটে কয়েক লাখ টাকা করে মাছের টাকা জমা হয়। ওই টাকা রাতে চলে যায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পকেটে। শনিবার নাছির মাঝি ঘাটে দুই ধাপে ১৬ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন দালালেরা। আর পুলিশ সদস্যরা এসে ব্যাগ ভরে মাছ নিয়ে যেতে দেখা গেছে। মাছের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, রোজা চলছেতো তাই কিছু মাছ নেয়া। এই বলে তারা তাড়া-তাড়ি মটর সাইকেলে চড়ে মাছ নিয়ে চলে যান। দালাল লিটন জানান, চোর সব দেশে সবখানেই আছে। জেলেরা চুরি করে মাছ ধরে আর সব চোরেরা এসে ভাগ নিয়ে যায়। আমাদের কাছে জেলেরা মাছ নিয়ে আসে আমরা বিক্রি করে দেই।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অবাধে ইলিশ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনের বিষয়ে জানতে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এএফএম নাজমুস সালেহী, সহকারী মৎস্য অফিসার আয়েশা খাতুন ও মেরিন অফিসার রবিউল ইসলামের মুঠো ফোনে ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। কোষ্ট গার্ডের মিডিয়া সেলে ফোন দিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।

৩৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares