শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গ্যাস সংযোগ পেলে নাটোরে আরও একটি শিল্পপার্ক করবে প্রাণ

গ্যাস সংযোগ পেলে নাটোরে আরও একটি শিল্পপার্ক করবে প্রাণ

নাটোর প্রতিনিধি : গ্যাস সংযোগ পেলে আগামী ৩ বছরের মধ্যে নাটোরে আরও একটি শিল্পপার্ক স্থাপন করবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। সেখানে নুডলস, মসলা, সরিষার তেল ও ফিশ প্রসেসিং প্ল্যান্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে গ্রুপটির। এর ফলে নতুন করে নাটোরে আরও এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।

বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে নাটোরে প্রাণ এগ্রো লিমিটেড কারখানার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) চৌধুরী কামরুজ্জামান কামাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নাটোরে গ্যাস সংযোগ নিয়ে আসতে আমাদের গ্রুপের চেয়ারম্যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। গ্যাস সংযোগ আসলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন শিল্পপার্ক স্থাপন করা হবে।

চৌধুরী কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ২০০০ সালে নাটোরের একডালায় প্রাণ-এর কারখানা স্থাপিত হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের দুই যুগের পথচলায় আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এ পর্যন্ত নাটোরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ। এ সময়কালে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের কারখানার ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহ করছে এই জেলার প্রায় ২২ হাজার মানুষ। যারা পণ্য উৎপাদন, মৌসুমী কর্মকাণ্ড ও পণ্য সরবরাহসহ নানা কাজে যুক্ত।

তিনি বলেন, নাটোরে শুধু পণ্য উৎপাদন নয়, প্রাণ গ্রুপের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের বড় অংশ নাটোর ও পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহ থেকে সংগ্রহ করা হয়। নাটোরে চুক্তিভিত্তিক কৃষকের কাছ থেকে প্রাণ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সমমূল্যের কৃষিপণ্য ক্রয় করেছে।

চৌধুরী কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের উৎপাদিত পণ্যসমূহের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বর্তমানে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে। পণ্যের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আমাদের কারখানায় বিভিন্ন সময়ে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকি। নাটোরে প্রাণ-আরএফএল সার্বিক কর্মকাণ্ডের ফলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার যেমন পবিরর্তন হয়েছে, তেমনি গ্রুপটি প্রতিবছর সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রদান করছে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।

নাটোরে গ্যাস সংযোগ পেলে বিনিয়োগের পথ আরও সুগম হবে। নাটোরের প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে এ জেলায় আরও ব্যবসা সম্প্রসারণ ও কৃষকদের কাছ থেকে আরও বেশি পরিমাণ কাঁচামাল ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।‌ বর্তমানে নাটোরে প্রায় ১৩ হাজার চুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রাণের জন্য আম, টমেটো, ডাল, বাদাম, মরিচ ও দুধ উৎপাদন করে। আগামীতে চিনিগুড়া চাল, হলুদ ও কাসাভাসহ আরও কয়েকটি পণ্য চুক্তিভিত্তিক চাষের আওতায় আনতে যাচ্ছে প্রাণ। এতে প্রাণের সঙ্গে এ জেলার আরও পাঁচ হাজার চুক্তিভিত্তিক চাষি যুক্ত হবে বলে জানান প্রাণের এই কর্মকর্তা।

সভায় প্রাণ এগ্রো লিমিটেড কারখানার জেনারেল ম্যানেজার হযরত আলী বলেন, অত্র অঞ্চলে প্রাণ-আরএফএল শুধু পণ্য উৎপাদন, বাজারজাত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা চুক্তিভিত্তিক কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনছে না, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ কারখানা সংলগ্ন এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, ধর্মীয় উপাসনালয়ে সহায়তা, বৃক্ষ রোপণসহ নানা ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এছাড়া খুব শিগগিরই এখানে একটি পাবলিক স্কুল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশন্স) তৌহিদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

১৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS