শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নরসিংদীর মেঘনা নদীতে শতাধিক খামারির খাঁচায় মাছ চাষে সফলতা 

নরসিংদীর মেঘনা নদীতে শতাধিক খামারির খাঁচায় মাছ চাষে সফলতা 

শান্ত বণিক, নরসিংদী থেকে: নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে খামারিরা ভাসমান খাঁচায় করছেন বিভিন্ন জাতীয় মাছ চাষ। ভাসমান মাছ চাষে শতাধিক খামারি সম্পৃক্ত রয়েছে। এতে করে  কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২শত পরিবারের। এ চাষের মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে স্বাদ বেশি এবং দামও পাওয়া যায় বেশি। তেলাপিয়া, কই শিং, পাবদাসহ বিভিন্ন মাছ চাষ হচ্ছে এ খাঁচায়। এক একটি তেলাপিয়ার ওজন হয় এক দেড় কেজি। ওজনে বাড়ে বলে অধিক দাম পেয়ে অনেকে বয়ে এনেছেন পারিবারিক ভাবে আর্থিক স্বচ্ছলতা।
জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরায় অপার সম্ভাবনা নিয়ে ২০১০ সাল থেকে খাঁচায় ভাসমান ভাবে মাছ চাষের যাত্রা শুরু করেছিলো। উপজেলার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের মেঘনার পাড়ে হাজী কামলা হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রথমে মেঘনা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের উদ্যোগী হউন। তার এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ লাভজনক দেখে গ্রামের অন্যান্য খামারী উদ্যোগী হয় এ পদ্ধতিতে মেঘনায় মাছ চাষ করতে। এখন প্রায় সরকারি ভাবে নিবন্ধিত ৩৫ জন খামারির প্রায় ৩ হাজার খাঁচা হয়েছে। আরো অনেকেই মাছ চাষ করছেন যারা সরকারি ভাবে নিবন্ধন করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন শতাদিক খামারী রয়েছেন যারা সরাসরি খাঁচার ভাসমান মাছ চাষ করছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার খাঁচা রয়েছে। প্রতিদিন এ খাঁচা থেকে মাছ বিক্রি হচ্ছে কয়েক হাজার মেট্রিক টন মাছ। যা স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে নরসিংদী জেলার অন্যান্য উপজেলার বাজারগুলোতে বিক্রি হয়। এ মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে বাড়ে বেশি, স্বাদও অনেক। বাজারের পুকুরে মাছের চেয়ে দাম ও পাওয়া যায় অনেক বেশি। ফলে অনেক পরিবারে ফিরিয়ে আসছে আর্থিক ভাবে সফলতা।
এ ব্যাপারে সফল মাছ চার্ষী মো. মুছা মিয়া জানান, প্রথমে তার বাবা কামাল হোসেন এ উপজেলার চরআড়ালিয়ার মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে এ মাছ চাষে বাবার পেশা তিনি ধরে রেখেছেন। তার আড়াইশ খাঁচা থেকে   সপ্তাহে তিন চারদিন মাছ বিক্রি করতে পারেন। তিন থেকে চার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করে তিনি তার সংসারে সফলতা ফিরে এনেছেন। তার দেখাদেখি এলকায় অনেকেই এ ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এমন একজন ভিকচান মেম্বার। তিনি মুছার বাবার মাছ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে এখন সফল খামারি। তার মতো আরো শতাধিক খামারি রয়েছে। তবে নদীর পানি দুষণে অনেক সময় মাছ মরে গিয়ে ভেসে উঠে। ফলে গুণতে হয় লোকসানের ঘানি। নদী দুষণ থেকে এবং নদীর নাব্যতা ঠিক পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাবিব ফরহাদ আলম জানান, নদীতে ভাসমান মাছ চাষে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আরো যারা নদীতে ভাসমান মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হবেন তাদেরও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। এদিকে নদী দুষণ ও নদীর নাব্যতা ফিরে পেতে নদী খনন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
৫১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares