বুধবার- ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তান্ডবে নরসিংদীতে কলাবাগানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তান্ডবে নরসিংদীতে কলাবাগানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

শান্ত বণিক, নরসিংদী থেকে: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে নরসিংদীতে বাড়িঘরসহ কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার ৬ উপজেলা পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব, রায়পুরা ও সদর উপজেলায় বাড়িঘরসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলায় কৃষি ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। শুধুমাত্র সদর উপজেলায় ৩ কোটি টাকার ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সোমবার রাতে কলা, পেঁপে, ধানের জমিসহ বিভিন্ন শাকসবজির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ো বাতাসে কলা বাগান, পেঁপে বাগান ভেঙ্গে পড়াসহ রোপা আমন ধানের জমি নুইয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কলা চাষীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দী, চিনিশপুর, নুরালাপুর, মাধবদী, তুলসিপুর, কবিরাজপুর, কুঁড়েরপারসহ বিভিন্ন এলাকায় কলাবাগান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা কামনা করছেন কলা চাষীরা। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় ভেঙ্গে পড়ে গাছপালা।
শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ সাধারচর এলাকার আব্দুল মোমেন বলেন, ধারদেনা করে ১২ শত কলা গাছ রোপন করেছিলাম। ঘূর্ণিঝড়ে পুরো বাগানের সব কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারী সহায়তা না পেলে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না।
মাধবদীর কবিরাজপুরের কলা চাষী মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন আমি ৪ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১৫০০ গাছ ভেঙে পড়ে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অপর চাষী মোঃ কবির হোসেন বলেন, ৫ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলাম। কিছু কলা গাছে ছড়ি বের হয়েছে, কিছু গাছে বের হচ্ছে এমন অবস্থায় ঝড়ে সব গাছ ভেঙ্গে গেছে। এতে আমার প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কলা চাষী আঃ মান্নান বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে আমার বাগানের ৭৫ ভাগ কলাগাছ ভেঙ্গে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি। সরকার ক্ষতি কাটাতে সহায়তা না করলে আমরা বিপাকে পড়বো।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: মোশারফ হোসেন বলেন, কলা চাষের জন্য নরসিংদীর খ্যাতি দেশজুড়ে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে নরসিংদী সদর উপজেলায় কলা চাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাবমতে সদর উপজেলায় ৩ কোটি টাকার মোট ৭০ হেক্টর ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ হেক্টর কলা বাগান, শাকসবজির জমি ২০ হেক্টর, সরিষা ৫ হেক্টর ও রোপা আমন ২০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তালিকা করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
৩৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS