মঙ্গলবার- ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
টাকাই হল ধর্ম-কর্ম  : লক্ষীপুর বিড়াবাড়িহাট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ বাণিজ্য – মামলা- কর্তৃপক্ষ নিরব !

টাকাই হল ধর্ম-কর্ম  : লক্ষীপুর বিড়াবাড়িহাট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ বাণিজ্য – মামলা- কর্তৃপক্ষ নিরব !

তারাগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর বিড়াবাড়ি হাট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য সহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত “তারাগঞ্জ লক্ষীপুর বিড়াবাড়িহাট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় প্রায় ৩০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য ” একটি প্রতিবেদন পত্রিকার প্রকাশিত হয়েছে। বিদ্যালয়ে নিয়োগ বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে।
এ মর্মে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। রংপুর তারাগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে হাসিনা বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন, যাহার মামলা নং ৬৬/২৩ ইং। আদালতে চলমান রয়েছে। ধার্য তারিখ আগামী ১৩রা জুলাই। সব তথ্য গোপন রেখে অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালেক শাহ গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি    প্রকাশ করে অর্থের বিনিময়ে মনগড়া প্রার্থী নির্বাচন করেন। ম্যানেজিং কমিটিকে  অবহিত না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। এ নিয়ে কৌতুহলের সৃষ্টি ফুসে উঠেছে জন সমাজে। সচেতন মহল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান নিয়ে হতবাক।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মইনুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয় গড়ার পেছনে জায়গা জমি শ্রম আমরা প্রতিনিয়ত দিয়েছি। উড়ে এসে জুড়ে বসে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালেহ শাহ বাপ দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ঐশিক্ষক নিয়মিত স্কুল ফাঁকি দেন, রংপুরে থাকেন আসতেও দেরি করে যায় তাড়াতাড়ি। লেখাপড়ার মান শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। আমরা দাতা সদস্য হয়ে প্রতিবাদ করলে, তিনি কোন কর্ণপাত করেন না। তিনি দম্ভের সাথে বলেন সরকার আমাকে বেতন দেয়, আমার কর্তৃপক্ষ রয়েছে তাদের কাছে  জবাবদিহি করব আপনারা কে।
অভিভাবক সদস্য হাছেন আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার বাপ দাদার সম্পত্তিতে এই প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালেক শাহ আপন মনেই এই প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। নিয়োগের বিষয়ে গোপনে বৈঠক করে নামমাত্র কয়জন সদস্য নিয়ে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইদ্রিস উদ্দিন কে সকল সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আজকের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়েছি। টাকাই হল ধর্ম-কর্ম টাকাই হলো বাপ দাদা, এই সমাজে কে শোনে কারো কথা। আমার মেয়েকে আয়া পোস্টে আবেদন করেও টাকা না দেওয়ায় বাতিল করে দিয়েছেন নিয়োগ কমিটি।
অফিস সহায়ক পদে আবেদন  কারি লিটন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার কাছে প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালেক শাহ পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমাকে ভুয়া প্রবেশপত্র দিয়েছে, যার রোল নং ৬। এখন একই পদে একাধিক প্রার্থীর টাকাও টালবাহানা শুরু করছে।
ইউপি সদস্য মিলন মিয়া বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজকে যোগ্য সভাপতি ও শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার মান ভেস্তে গেছে, শুরু হয়েছে নৈরাজ্য। প্রশাসন সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর বিড়াবাড়ি হাট উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক  আব্দুস ছালেহ শাহ বলেন, আমি সরকারি বিধি মেনেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও সকল কার্যক্রম করেছি। মামলা করে কোন লাভ নেই। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ইদ্রিস উদ্দিন বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে এই প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হয়েছি। চাকরি চাইলেই দেয়ার সুযোগ নেই, সবাই আমার প্রতিবেশি যোগ্যতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার পাবে। তবে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করতে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বেগম বলেন, ওই প্রতিতষ্ঠানটি নিয়ে যোগদানের পর হতেই নানান অভিযোগ পেয়েছি। আগামী ২০  জুন প্রাথমিকভাবে নিয়োগ পরিক্ষা রংপুর জেলা স্কুলে নির্ধারন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আদালতে মামলা হয়েছে, মামলার কপি ও পেয়েছি। কদিন আগে মামলা খারিজের কাগজ প্রতিষ্ঠান দিয়েছে। আজ (আগামীকাল) সোমবার মামলার নথিপত্র যাচাই বাছাই করার নিয়ে আসতে বলেছি। তাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন ভাবেই নিয়োগ কর্যকর ব্যাহত হবে। সরকারি বিধি অনুসারে নীতিমালা ভঙ্গ করলে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হবে।
২৫৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares