মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কাউখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক গফুর আহমদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও তথ্য গোপনের অভিযোগ।

কাউখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক গফুর আহমদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও তথ্য গোপনের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা। রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক গফুর আহমদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি, প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক-কে  উদ্দেশ্যে ফিতলের কলিং বেল দ্বারা মাথায় আঘাতের চেষ্টা করলে তিনি নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। একই অভিযোগের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক বরাবরেও প্রেরণ করেন মর্মে জানান।

অভিযোগে অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) আরো বলেন, প্রভাষক গফুর ডিগ্রী পাবলিক পরীক্ষার ডিউটি বাদ দিয়ে অনুমতি ব্যতীত বাহিরে দীর্ঘ সময় অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এসময় অধ্যক্ষের কক্ষে উপস্থিত উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বাঁধা প্রদান না করলে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতো বলে জানান পরীক্ষার দায়িত্বরত টেক অফিসার(উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি) এয়ার মোহাম্মদ। টেক অফিসার আরো জানান একজন কক্ষ পরিদর্শক অনুমতি ব্যতীত হলের বাহিরে যাওয়ার নিয়ম নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, গফুর আহমেদ কলেজে গ্রুপিং সৃষ্টির মাধ্যমে সর্বদা আতংক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসকল অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার মো: গাজীউল হক, কাউখালীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয় বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নুরীয়া । তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী দু’জনেই একে অপরের বিরুদ্ধে ছোট-খাট বিষয়ে প্রতিনিয়ত অভিযোগ নিয়ে আসেন। তবে গফুর সাহেবের বিরুদ্ধে দুই জায়গায়  চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ ও তদন্তের খবর জানা-জানি হলে অভিযুক্ত বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগকারীকে হুমকি-ধামকি ও হয়রানী করার চেষ্টা করছেন মর্মে মোহাম্মদ ইসহাক প্রতিনিধিকে জানান।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(কলেজ-২) স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে জানা যায়, গফুর আহমেদ কর্তৃপক্ষের অগোচরে একই সাথে কাউখালী কলেজে ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করেছেন। যা চাকরি বিধি পরিপন্থী। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজ সরকারিকরণের পদ সৃজন প্রস্তাব থেকে তার নাম বাদ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায় অভিযুক্ত গফুর আহমেদ নিজেই একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার কথা স্বীকার করে গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর মানবিক বিবেচনায় যোগদানের তারিখ পরিবর্তনের আবেদন করলে তৎকালীন পরিচালনা পরিষদ এ অনিয়মের শাস্তিস্বরূপ তার চাকরির মেয়াদ প্রায় দেড় বছর কমিয়ে দেন। যা বিধিসম্মত না হওয়ায় যোগদান তারিখ ও একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি সম্পর্কিত সমস্যা তদন্তাধীন রয়ে যায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত বেসরকারী কলেজ শিক্ষকদের চাকরীর শর্তাবলী  রেগুলেশন এর ধারা ১২ এর (ছ) উপধারায় স্পষ্ট বলা আছে-“কোন শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে বেতনসহ অথবা বিনা বেতনে কোন কাজ করিতে পারিবেন না”।

অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায় উক্ত প্রভাষক তথ্য গোপন ও ভুয়া ডকুমেন্টস জমা দিয়ে সুকৌশলে জনপ্রশাসন থেকে পরবর্তীতে পদ সৃজন করিয়ে নেন যা বিধি বহির্ভূত। গফুর আহমদ বলেন, এসব অভিযোগ করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ার পর আমি স্কুলে চাকরি করিনি।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এজাহার মিয়া জানান, ইসহাক সাহেব এবং গফুর আহমদ এর মধ্যে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে কেউ কাউকে দেখতে পারেনা। আর ইসহাক সাহেব কারো কথা শুনতে চাইনা।

৯৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares