ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক এলাহীর মুক্তির দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক এলাহীর মুক্তির দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন 

স্টাফ রিপোর্টার : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার রাঙামাটির সাংবাদিক ফজলে এলাহীর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বুধবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের মানববন্ধন থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) ‘কুখ্যাত’ আখ্যা দিয়ে সেটি বাতিলের দাবিও করা হয়। মানববন্ধনে রাঙামাটিতে কর্মরত সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে হওয়া এক মামলায় ফজলে এলাহীকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক ফজলে এলাহী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, কালের কণ্ঠ ও এনটিভির রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি।

পুলিশ জানিয়েছে, পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমে ২০২১ সালে প্রকাশিত একটি সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ওই এলাকার সাবেক নারী সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে নাজনিন আনোয়ার এই মামলা করেন। চিনু বর্তমানে রাঙামাটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ফজলে এলাহীর মুক্তির দাবিতে করা মানববন্ধনে রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, “সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে হয়রানি করতেই সাংবাদিক ফজলে এলাহীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তার মুক্তির দাবি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মানুষকে হয়রানি বন্ধের দাবি জানাই।“

জিয়া আরও বলেন, আজ সারা দেশের সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। ফজলে এলাহীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হেফাজত উল বারী সবুজ বলেন, এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার। যে কারণে প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছে দেশের সাংবাদিক সমাজ।

সাংবাদিক ফজলে এলাহী স্ত্রী সেলিনা সুমি বলেন, এই জনপদের সব মানুষের অধিকার, প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা, এই জনপদের নতুন প্রজন্মের সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছেন ফজলে এলাহী। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি স্বার্থহীন সাহস দেখিয়েছে। ক্ষমতা ও টাকার খেলায় এই জনপদের মানুষকে কিভাবে শোষণ করা হচ্ছে; তা বেরিয়ে আসুক সব সংবাদকর্মীর অনুসন্ধানি লেখনিতে।

“একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ্বারা মানুষকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। আমরা ফজলে এলাহী মুক্তি চাই।”

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে। এতে আরও বক্তব্য দেন রাঙামাটি জেলায় কর্মরত সাংবাদিক নির্মল বড়ুয়া মিলন, রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতির সহ সভাপতি সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি প্রান্ত দেবনাথ রনি, রাঙামাটি কটেজ-রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ললিত সি চাকমা, খাগডাছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ, কাউখালীর সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন ও লংগদু উপজেলা প্রেসক্লাব সদস্য আরমান খান প্রমূখ।

এদিকে বুধবার দুপুরে রাঙামাটির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা বেগম মুক্তার আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত সাংবাদিক ফজলে এলাহীর (আসামি) জামিন মঞ্জুর করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ও রাঙামটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোখতার আহমেদ। তিনি জানান, আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি জামিন যোগ্য। বিজ্ঞ আদালতে আমরা জামিন আবেদন করেছি৷ আদালত ১ হাজার টাকা বন্ডে সাত দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির হওয়ার শর্তে আমার জিন্মায় সাংবাদিক ফজলে এলাহীর জামিন মুঞ্জর করেছেন। আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

২৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares