মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বরিশালে ভালো ১১ সেতুর রেলিংয়ে কি করবে ?

বরিশালে ভালো ১১ সেতুর রেলিংয়ে কি করবে ?

বরিশাল ব্যুরোঃ আগৈলঝাড়ায় অর্ধশতাধিক সেতুর রেলিং নেই অথচ সেগুলো মেরামত না করে ১১টি ভালো সেতুর রেলিং ভেঙে সংস্কার করছে এলজিইডি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উপজেলাবাসী। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে ১৫ দিন সরেজমিন ঘুরে সেতুগুলো নিয়ে এই চিত্র উঠে এসেছে।

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুগুলোর রেলিং অকেজো হওয়ায় ভেঙে নতুন করে মেরামত করা হচ্ছে। যেসব সেতুর রেলিং ভাঙা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে- গৈলা ইউনিয়নের রশিদ ফকিরের সেতু, গিয়াস মোল­ার বাড়ির সামনের সেতু, অশোক সেন সেতু, রামের বাজারের সেতু, রাজের বাড়ির দক্ষিণ পাশের সেতু, সেরাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের সেতু ও বাজনা সেতু। অথচ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক সেতুর রেলিং ভাঙা অবস্থায় বছরের পর বছর পড়ে থাকলেও নির্বিকার এলজিইডি বিভাগ।

এসব সেতুর মধ্যে রয়েছে সদর বাজারে ঢোকার সেতু, পুরাতন ডাকবাংলোর সেতু, পূর্ব ফুল­শ্রী সেতু, রাংতা সীমান্তের সেতু, যবসেন স্কুলের পশ্চিম পাশের সেতু, বাকাল সড়কের নজরুল সরদারের বাড়ির সামনের সেতু, সাবেক ইউপি সদস্য প্রার্থী খাদিজা বেগমের বাড়ির সামনের সেতু, কোদালধোয়া মহিম বৈষ্ণবের বাড়ির সামনের সেতু, কোদালধোয়া বাজারের উত্তর পাশের সেতু, বড়মগরা সড়কে অধ্যাপক অপূর্ব লাল হালদারের বাড়ির সামনের সেতু, সাবেক ইউপি সদস্য প্রভা বিশ্বাসের বাড়ির সামনের সেতু, কালিপদ অধিকারীর বাড়ির সামনের সেতু, উত্তম অধিকারীর বাড়ির সামনের সেতু, পয়সা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের সেতু, কান্দিরপাড় খালের ওপরের সেতু, আস্কর বাজারের সেতু, চক্রীবাড়ি সড়কের সেতু, সুজনকাঠি সরদার বাড়ির সামনের সেতু, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামরুজ্জামান সেরনিয়াবাত আজাদের বাড়ির সামনের সেতু, টেমার মালেকা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের সেতু, কুমারভাঙ্গা সেতু, শিহিপাশা মাতবর বাড়ির মসজিদ-সংলগ্ন সেতু, বালীবাড়ির সামনের সেতু, গুপ্তের হাটের উত্তর পাশের সেতু, ঐচারমাঠ বাজার থেকে পূর্ব দিকের সেতু, সাংবাদিক প্রবীর বিশ্বাস ননীর বাড়ির সামনের সেতু, সাতপাড় মন্দির-সংলগ্ন পূর্ব দিকের সেতু, ত্রিমুখী মোল­াপাড়া সড়কের সোহরাব হাওলাদারের বাড়ির সামনের সেতু, চুন্নু হাওলাদারের বাড়ির সামনের সেতু, মোল­াপাড়া স্কুল-সংলগ্ন সেতু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহŸায়ক অরুণ কৃষ্ণ হালদারের বাড়ির সামনের সেতু, ভালুকশী সেতু, পন্টেশ বাজার সেতু, গোয়াইল সেতু, লখার মাটিয়া সেতু ও সাবেক চেয়ারম্যান হাসমত আলীর বাড়ির সামনের (রাংতা) সেতু।

এসব সেতুর কোনোটির এক পাশের কোনোটির দু’পাশের রেলিং নেই। কিছু সেতু স্থানীয়রাই জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করেছেন। যেমন বড় মগড়া কোদালধোয়া সড়কে কালিপদ অধিকারীর বাড়ির সামনের সেতু ও পয়সা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের সেতুর মাঝখানে গর্তের সৃষ্টি হলে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে কোনোরকমে মেরামত করেছেন তারা। এসব রেলিংবিহীন সেতু দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজারো লোকজন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। অনেক সময় ঘটছে দুর্ঘটনাও। অথচ এ সেতুগুলো মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে ১১টি সেতুর রেলিং ভেঙে মেরামতের বিষয়ে তথ্য না পাওয়ায় এসব সেতুর অন্যান্য কী কী সংস্কার করা হবে তা জানা সম্ভব হয়নি। মোল্লাপাড়া গ্রামের আশ্রাব আলী মৃধা বলেন, সরকারের টাকা নষ্ট করে ভালো সেতুর রেলিং ভেঙে মেরামত করা হচ্ছে। অথচ তাঁদের এলাকার অনেক সেতুর রেলিং না থাকলেও সেদিকে কারও নজর নেই। এ বিষয়ে বরিশাল এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলী অবশ্যই আপনাদের ১১টি সেতুর রেলিং সংস্কারের বিষয়ে তথ্য দিবে।

তবে ঠিকাদার সাজ্জাদ হোসেন মিলু জানান, এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশে তিনি প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এ কাজ করছেন। তাঁর কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। ফলে কোনো তথ্যও নেই। এক সপ্তাহ পরে তথ্য দেবেন জানালেও পরে তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। উপজেলা এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী রবীন্দ্র চক্রবর্তী জানান, এ বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই। তাঁর আগের প্রকৌশলী ১১টি সেতুর সংস্কার কাজের জন্য জেলা এলজিইডি বিভাগের মাধ্যমে টেন্ডার আহŸান করেন। সেতুগুলোর রেলিং অকেজো হওয়ায় ভেঙে নতুন করে মেরামত করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যেসব সেতুর রেলিং নেই, সেসব সেতু যদি ভালো থাকে তাহলে রেলিং মেরামত করা হবে। তবে সেতু ঝুঁকিপূর্ণ থাকলে সেগুলো নতুন করে তৈরি করা হবে।

৯০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares