শনিবার- ১৫ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১লা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নাটোরে পৃথক ঘটনায় ৩ লাশ- গ্রেফতার এক

নাটোরে পৃথক ঘটনায় ৩ লাশ- গ্রেফতার এক

ইসাহাক আলী, নাটোর, ২৮ জানুয়ারী-নাটোরের লালপুর উপজেলার উধনপাড়ার বোমা কালাম খ্যাত আবুল কালাম (৫০)কে কুপিয়ে হত্যা. গুরুদাসপুরে ধান ভাঙ্গানো মেশিনে জড়িয়ে রমজান আলী নামে মেশিন ড্রাইভার ও একই উপজেলার কাছিকাটা এলাকার মহাসড়কের পাশ থেকে আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোর ও সকালে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে কালাম হত্যার ঘটনায় তার সৎ পুত্র আল আমিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার বাদী, মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের লালপুর উপজেলার বোমা কালাম খ্যাত আবুল কালাম প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় ১০ বছর আগে একই এলাকার বড় বাদকয়া গ্রামের জহিম উদ্দিনের মেয়ে মোছাঃ আরজিনা খাতুন (৩৫) কে বিয়ে করে সেখানেই ঘর জামাই হিসেবে বসবাস করছিল। তাদের সংসারে আবির নামে ৯ বছর বয়সি একটি ছেলে রয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের ছোট ভাই সহিদুজ্জামান সালাম ও চাচাতো ভাই মাসুদ রানা প্রতিবেশীদের মাধ্যমে তাদের ভাই আবুল কালামকে হত্যা করে লাশ গোপন করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে বাড়ির পিছনে ছোপ ছোপ রক্ত ও ভাইয়ের ব্যবহুত শীতের টুপি ও স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখলেও ভাইকে খুঁজে পায়নি। পরে লালপুর থানায় গিয়ে লিখিত মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্ত্রী মোছাঃ আরজিনা খাতুন, তার পিতা জহিম উদ্দিন (৬০), মাতা মোছাঃ জালেমা (৫৫) ও আগের পক্ষের ছেলে আল আমিন (১৬) কে অভিযুক্ত করা হয়। পুলিশ তাৎক্ষনিক আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে সে তার মায়ের সাথে সৎ পিতার পারিবারিক কলহের কারনে সৎ পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো পাশের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের হাজী মজনু কল্লার পুকুর পাড় থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসী জানায়, নিহত আবুল কালাম, বোমা তৈরী, বিক্রিসহ নানা ধরণের চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল। বহুবছর আগে একবার তার বাড়িতে বড় ধরনের বোমা বিস্ফোরনের ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষ তাকে বোমা কালাম হিসেবেই চিনে।

লালপুর থানার ওসি মোনোয়ারুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, আবুল কালাম হিসেবে এলাকার কেউ আর তাকে চিনে না। সমাজে বোমা কালাম হিসেবেই সে পরিচিত। এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে নাটোরের গুরুদাসপুরে রাইচমিলের ফিতায় জড়িয়ে রমজান আলী (৪৫) নামের এক ড্রাইভারের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল আনুমানিক ১১টার সময় উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের হাজি বাজার এলাকার মুছাইক রাইচ মিলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রমজান আলী ড্রাইভার উপজেলার নাজিপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর বীরবাজার এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, রজমান আলী দীর্ঘদিন যাবৎ হাজিবাজার এলাকার নাছিম উদ্দিনের রাইচ মিলে ধান ভাঙ্গানো মেশিনের ড্রাইভার হিসাবে কাজ করছিলেন। শনিবার সকালে ধান ভাঙ্গানোর সময় রাইচ মিলের ফিতায় আঠা লাগাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত রমজান আলীর হাত জড়িয়ে যায়। এ সময় তার পুরো দেহ ফিতাতে আটকে গেলে দেহের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ক্ষত বিক্ষত মরদেহটি উদ্ধার করেছে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করেছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পর মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অপরদিকে একই উপজেলার কাছিকাটা মোড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশ থেকে আবু সাঈদ (৪৫) নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা ্ও গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন জানান, এলাকাবাসী একটি মরদেহ বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে থনাা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের তৎপরতায় তাৎক্ষণিক লাশটির পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তিনি বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার আলোকছত্র গ্রামের আবু জাফরের ছেলে আবু সাঈদ। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। সিআইডি ছাড়ার পিবিআই ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে নিহতের কারণ জানা যায়নি। ময়না তদন্তের নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে মরদেহটি পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হবে।

৫৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares