বুধবার- ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কলমাকান্দায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কৃষক নিহতের ঘটনায় থানায়  মামলা, গ্রেপ্তার – ২

কলমাকান্দায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কৃষক নিহতের ঘটনায় থানায়  মামলা, গ্রেপ্তার – ২

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকােনার কলমাকান্দা উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কৃষক হেলিম মিয়া (৩৫)  নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা  হয়েছে । আজ শনিবার সকালে নিহতের বড় ভাই আব্দুল বারেক (৫৫) বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১২ জনকে আসামি করে এই হত্যা মামলাটি করেন। নিহত হেলিম মিয়া  কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মৃত নেয়ামত আলীর ছেলে।
মামলা নথিভুক্তের পর ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আশিকুর রহমান নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল হরিপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে  এজাহারভুক্ত আসামী আকরামুল মিয়া ওরফে আকরাম (২১) ও মামুন মিয়া (২১) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে ওইদিন বিকালে জেলা আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আপন মিয়ার ছেলে আকরামুল মিয়া ওরফে আকরাম (২১) ও একই গ্রামের মৃত খুরশেদ আলমের ছেলে মামুন মিয়া (২১) ।
‘ওরা ফুটবল খেলার পুরস্কার না দিয়ে আমার ভাতিজার মরদেহ দিয়েছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’ ভাতিজার হত্যাকাণ্ডের তথ্য জানাতে গিয়ে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন নিহত হেলিমের চাচা আব্দুল হাশিম।
এর আগে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি ঘটনায় নিহত হন কৃষক হেলিম মিয়া (৩৫)। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হেলিম ও তার চাচিসহ তিনজন আহত হয়। হেলিম মিয়া কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মৃত নেয়ামত আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে নাজিরপুর ইউনিয়নের হরিপুর ও কান্দাপাড়া গ্রামের মধ্যে পার্শ্ববর্তী বড়ইউন্দ গ্রামের এক ধান ক্ষেতে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। খেলার একপর্যায়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে স্থানীয়রা তা থামিয়ে দেয়। পরে ওই ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার আবারও ঝগড়া লাগে এবং দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে হেলিমের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে শুক্রবার বিকেলে হেলিমের অবস্থা আবার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে সন্ধ্যায় ঢাকায় উদ্দেশে রওনা হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। আহত অন্যান্যদের মধ্যে নিহতের চাচাতো ভাই খেলোয়াড় এমদাদুল হক (২২) কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে এবং এমদাদুলের মা হাবিবা খাতুন (৫৩) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
নিহতের চাচাতো ভাই আহত এমদাদুল হক বলেন, সেদিনের খেলায় আমাদের কান্দাপাড়া ফুটবল টিম ১-০ গোলে হরিপুর গ্রামের টিমকে হারায়। পরে আয়োজক মাজহারুলের কাছে পুরস্কার চাইলে, পুরস্কার পরে দেওয়া হবে বলে আমাদের বিদায় করে দেন। পরে আমরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলে পেছন থেকে ধর ধর বলে হরিপুর টিমের রুবেলসহ আরও কিছু লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
নিহতের চাচা আব্দুল হাশিম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। গুরুতর আহত অবস্থায় আমার ছেলে এমদাদুল, ভাতিজা হেলিম ও স্ত্রী হাবিবাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা হাসপাতালে নিয়ে আসি।
এবিষয়ে খেলার আয়োজক মাজহারুলসহ ওই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। হেলিমের মৃত্যুর খবর শুনে গা ঢাকা দিয়েছেন আয়োজকসহ ওই গ্রামের ফুটবলটিমের সদস্যরা।
এব্যাপারে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি)  আবুল কালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের  বলেন, নিহতের ভাই আব্দুল বারেকের দায়ের করা হত্যা মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে।
৪১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares