শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাঘায় পদ্মার ভাঙ্গন অতঙ্কে ১১ স্কুলের ২ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী

বাঘায় পদ্মার ভাঙ্গন অতঙ্কে ১১ স্কুলের ২ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘার বিশাল চরজুড়ে রয়েছে নয়টি প্রাথমিক ও দু’টি উচ্চ বিদ্যালয়। এখানে লেখাপড়া করে প্রায় ২ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা সব সময়ই পদ্মার ভাঙ্গন রক্ষায় স্থান পরিবর্তনের অতঙ্কে থাকেন। তবুও নদী ভাঙ্গন পিছু ছাড়ে না।

স্থানীয়রা জানান, পদ্মায় পানির সাথে সাথে বাড়ছে অতঙ্ক। কখনও ভাঙ্গন, আবার কখনও সর্বস্ব হারানো ভয়। এমন আতঙ্কেই দিন কাটছে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার চরের মানুষের। গত বছর চরকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কালিদাসখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লক্ষ্মীনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। সর্বশেষ গতমাসে পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবারসহ তিনবার স্থানান্তর করা হলো। এ সময় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া হয়। বর্তমানে তৈরী করা ঘরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া পদ্মার চরে মধ্যে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, চকরাজাপুর, পলাশি ফতেপুর, ফতেপুর পলাশি, লক্ষ্মীনগর, চকরাজাপুর, পশ্চিম চরকালিদাসখালী, পূর্ব চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। চকরাজাপুর ও পলাশি ফতেপুর এই দুটি উচ্চ বিদ্যালয়। পদ্মার চরে ৯টি প্রাথমিক ও দুটি উচ্চবিদ্যালয় মিলে প্রায় ২ হাজার ৬০০ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিবছর শিক্ষকদের মধ্যে চিন্ত থাকে নদী ভাঙ্গন নিয়ে। আতঙ্ক থাকে অভিভাবকদের মধ্যেও। স্কুল অন্যস্থানে নিয়ে গেলে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা যাতায়াতে কষ্ট হয়। এই চরের স্কুলগুলো ভাঙ্গা গড়ার মতোই।

এবিষয়ে চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয় পদ্মা গর্ভে চলে গেছে। এবারসহ তিনবার বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হলো।

এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, পদ্মায় বর্তমানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। চকরাজাপুর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে পদ্মা তীর রক্ষার্থে কাজ করলে চকরাজাপুরবাসি নতুন স্বপ্নে উজ্জীবিত হবে।

তিনি বলেন, চরকালিদাসখালী, জোতকাদিরপুর, দিয়ারকাদিরপুর, লক্ষ্মীনগরসহ ১৫টি চর ভাঙনের মুখে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে ২০টি বাড়ি, আম বাগান, বড়ই বাগান, পেয়ারা বাগান, শাকসবজি, আখ ক্ষেত, বিভিন্ন ফসলি জমিসহ শত শত বিঘা জমি পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার আলাইপুর থেকে চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনগর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছি। নদী খনন করলে নাব্যতা ফিরে পাবে। নদীর মূল ¯্রােতধারা নদীর কেন্দ্র বরাবর প্রবাহিত হবে। এর সাথে পদ্মা তীর রক্ষার্থে স্থায়ী বাঁধ, স্পার, টি বাঁধ, আই বাধঁ নির্মাণ করা হবে। ফলে নদী ভাঙ্গন অনেকাংশে কমে আসবে। অতিশীর্ঘই এ কাজ শুরু করা হবে।

৩৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares