![জেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রার্থীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রার্থীরা](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2022/09/img_20220928_211650508.jpg)
জেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রার্থীরা
![](https://spnewsbd.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
সারোয়ার হোসেন, তানোর: আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। তফসীল অনুযায়ী গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক পেয়েই প্রচারের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে প্রচার প্রচারনা। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় ভাবে মনোনায়ন পেয়েছেন রাজশাহী
মহানগর আওয়ামীলীগের বর্ষিয়ান রাজনীতি বিদ মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল হোসেন। তবে তিনি দলীয় মনোনায়ন পেলেও বরাবরের মতই নৌকা প্রতীক থাকছে না । আগের নির্বাচনেও দলীয় নৌকা প্রতীকে ভোট হয়নি। তিনি এনির্বাচনে কাপ পিরিচ প্রতীকে ভোট করবেন। নতুন মুখ হিসেবে এই বর্ষিয়ান প্রার্থী দলীয় মনোনায়ন পাওয়ার পর থেকে রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে ।
এদিকে সাধারন সদস্য ২ নম্বর পদে নির্বাচন করছেন তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি সাবেক কলমা ইউনিয়ন( ইউপির) চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম স্বপন। তিনি প্রথমবারের মত জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে ভোটের মাঠে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। ইতিপূর্বেই তানোর উপজেলার প্রতিটি ভোটারের সাথে মতবিনিময় করেছেন। তিনি তালা প্রতীকে ভোট করছেন। সোমবার তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতীক পান। এসময় ভোটের মাঠে অবিরাম ছুটে চলা তানোর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি তরুন প্রজন্মের আইকন লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় রয়েছেন গোদাগাড়ী উপজেলা নব নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদ। তিনিও সাধারন সদস্য পদে টিবওয়েল প্রতীকে ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার জেলা পরিষদ গঠন করেন। এই সরকারের সময় এবারের নির্বাচন দিয়ে তিনবার হবে। রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমে দলীয় মনোনায়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুব জামান ভুলু। দ্বীতিয় নির্বাচনে তিনি মনোনায়ন পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শিল্পপতি মোহাম্মাদ আলী সরকার। তিনি এবার দলীয় মনোনায়ন পাননি । আর তার নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারনে দলও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে তাদের সহচর দেওপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আকতারুজামান আকতার। তাকে ইতিপুর্বেই দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এবার দলীয় ভাবে মহানগরের নেতা মনোনায়ন পাওয়ায় নির্বাচন করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল হোসেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধি, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিনিধিরাই। চেয়ারম্যান পদে আরেক প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকে গোদাগাড়ী দেওপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান। অবশ্য তিনি বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারনে গত ইউনিয়ন ভোটে পাননি দলীয় মনোনায়ন। হারাতে হয় ইউপি চেয়ার। তিনি এবার আরেক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারের খোয়াব পেতেই নির্বাচনের মাঠে আছেন বলেই মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। যার কারনে তাকে দলের পদ থেকেও অব্যাহতি দিয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের ত্রান সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এই আকতার সেভেন স্টারের অন্যতম কর্নধর ছিলেন।
এদিকে তানোর উপজেলার সাত ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন। আরেক প্রার্থী মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা।
নেতারা জানান, তানোর উপজেলা নিয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ড। যারা নির্বাচন করতে আগ্রহী তাদের সিবি চাওয়া হয়েছিল এবং দলীয় ভাবে যাকে সমর্থন দেওয়া হবে তিনিই প্রার্থী হবেন। সেই মোতাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপনকে সমর্থন দেওয়া হয়। গোলাম মোস্তফাও সিবি জমা দিয়েছিলেন এবং তিনিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সমর্থন না পেলে ভোট করব না। কিন্তু সিদ্ধান্তের বাহিরে তিনি ভোটের মাঠে রয়েছেন। তিনি গত নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। যেখানে উপজেলা পর্যায়ে দলের সভাপতি ভোট করছেন, সেখানে তার প্রতিপক্ষ হওয়া উচিৎ হয়নি। আমরা অনুরোধ করব তিনি যেন তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে সভাপতিকে সমর্থন দিবেন।
এছাড়াও গোদাগাড়ী উপজেলা ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। নয়টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ১ নম্বর ওয়ার্ড। এওয়ার্ডে দলীয় ভাবে সমর্থন পেয়ে ভোট করছেন গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের নব নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদ। তার বিপরীতে ওই উপজেলার বিতর্কিত সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান। তিনি তালা প্রতীকে ভোটের মাঠে। আর দল সমর্থিত আব্দুর রশিদ টিবওয়েল প্রতীকে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার জানান, দলীয় ভাবে সভাপতিকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এজন্য তিনি ভোট করছেন। দল তাকে সমর্থন না দিলে ভোট করতেন না। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের মতামত অপেক্ষা করে গোলাম মোস্তফা ভোটের মাটে রয়েছেন। আমরা আসা করব তিনি সভাপতিকে সমর্থন দিয়ে সরে দাড়াবেন।
তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, তানোর উপজেলার জন্য সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন ও গোদাগাড়ী উপজেলায় সাধারন সম্পাদক আব্দুর রশিদকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আসা করছি তারা বিজয়ী হবেন। যারা দলের মতামত না মেনে ভোটের মাঠে আছেন তাদেরকে অনুরোধ করে বলব দলের বাহিরে গিয়ে ভোট না করে দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে থাকাটাই ভালো।
গোদাগাড়ী পৌর মেয়র উপজেলা নব নির্বাচিত সভাপতি ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস জানান, আমি জানিনা যারা দীর্ঘ দিন ধরে দল করে মুল ধারার সাথে না থেকে কেন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। নির্বাচন আসলেই কিছু সুবিধাবাদী নেতাদের চক্রান্ত শুরু হয়ে যায়। তাদের ভাবা উচিৎ দলের জন্যই মানুষ তাদের চিনে সম্মান করে। জেলা পরিষদ ভোটে বিশেষ করে সদস্য পদে দল যাকে সমর্থন দিয়েছেন তার পক্ষে কাজ করাটায় ভালো।
৮৮ বার ভিউ হয়েছে