শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সাপাহারে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত আমচাষিরা।

সাপাহারে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত আমচাষিরা।

৫৪ Views

তছলিম উদ্দীন,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল সাপাহার। দিন দিন এই অঞ্চলের আমের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। চলতি মৌসুমে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী আমের মুকুল।
আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ততা বেড়েছে এই অঞ্চলের আম চাষে সম্পৃক্ত সকল আমচাষীদের ।
দেশের মোট উৎপাদিত আমের ৬০ শতাংশ আম এই জেলায় উৎপাদিত হয়ে থাকে। উৎপাদিত আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশ ও রপ্তানি হয়ে থাকে সুনামের সাথে। আমের মিষ্টতার সাধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে থাকায় আমের রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত এই অঞ্চল।
সরেজমিনে, সাপাহার সদর ইউনিয়ন সহ তিলনা ,শিরন্টি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে ইতোমধ্যেই অধিকাংশ গাছে উঁকি দিতে শুরু করেছে আমের মুকুল । কিছু কিছু বাসা বাড়ির গাছেও দেখা গেছে আমের মুকুল । আম আমাদের দেশে মৌসুমি অর্থকরী ফল হিসেবে গুরুত্ব পেলেও বর্তমানে এটি শিল্পজাত পণ্য হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রাকৃতিক ও ভৌগলিক অবস্থান এবং আম চাষের উপযোগী আবহাওয়ার কারণে এই অঞ্চলে বেড়েছে আমের উৎপাদন, এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও আম রপ্তানি হচ্ছে।
সাপাহার সদর ইউনিয়নের আমচাষি আশরাফুল হক জানান এবছর ১৫০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করছেন তিনি, অধিকাংশ বাগানে আমের মুকুল দেখা দিয়েছে মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে ভালো উৎপাদনের আশাও করছেন তিনি।
উপজেলার পিছল ডাঙ্গা গ্রামের আমচাষি মমিনুল হক বলেন এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় বাগানে ইতোমধ্যেই মুকুল দেখা দিয়েছে এবং তুলনামূলক ভাবে কিটনাশক কম ব্যবহার হচ্ছে।
সাপাহার উপজেলাল কৃষিদপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৯হাজার ২শত ৮০হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে , এখন আমের মুকুল শুরুর সময় প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড এবং ২গ্রাম কার্বেনডাজিম ছত্রাকনাশক প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে ।
সকল বাগান ও আমগাছে সম্পুর্ন মুকুল আসতে আরোও ১৫-২০ সময় লাগতে পারে বলে কৃষিবিদ ও আমচাষীরা জানিয়েছেন। ফুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে পুষ্প মুঞ্জনিরতে পাউডারি মিলডিউ অ্যানত্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। এতে গাছের পাতা মুকুল ও কচি আমে কাল দাগ পড়ে সেক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কৃষি বিষয়ক যেকোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগের জন্য সকল আমচাষীদের পরামর্শ দেন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) সেলিম আহমেদ বলেন, নওগাঁর সাপাহার হতে আম রপ্তানির পথ সুগম করতে এই অঞ্চলে প্যাকিং হাউজ তৈরি বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে,এটি বাস্তবায়ন হলে আমচাষীদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে এবং এলাকায় অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

Share This