রবিবার- ৩০শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৬ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য —–মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য —–মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি

খায়রুন নাহার বহ্নি,বীরগঞ্জ(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ আড়াইশত বছরের পুরানো ঐতিহ্য ও দিনাজপুরের রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহাসিক কান্তজীউ মন্দির হতে শ্রীশ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ নৌপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। রাত সাড়ে ১০ টায় রাজবাড়ীতে পৌছানোর বলে জানা গেছে।

বুধবার (১৭ আগস্ট ২০২২) সকাল সাড়ে ৭টায় ঐতিহ্যবাহী কান্তজীউ মন্দির হতে পূজা অর্চনা শেষে শ্রীশ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ পূর্ণভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। সেখানে দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল উপস্থিত থেকে শ্রীশ্রী কান্তজীউ যুগল বিগ্রহ’র নৌবহর যাত্রার বিদায় জানান। সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আরেক রুপ কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে পূর্ণভবা নদীর দুই তীরে ভক্ত-পূণ্যার্থীর ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।

শ্রীশ্রী কান্তজীউ যুগল বিগ্রহ’র নৌবহরকে বিদায় জানানো পরে সাংবাদিকদের বলেন, সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য। অসা¤প্রদায়িক চেতনার কারণেই এদেশে সম্মিলিতভাবে প্রত্যেকটি স¤প্রদায় ও ধর্মের মানুষসহ অবস্থান করছে। যারা ধর্মকে ধারণ করে না, তারাই উগ্রবাদী সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। ধর্মান্ধতা একটি সমাজের ঐতিহ্য কে নষ্ট করে দেয়। তাই আমরা ধর্মীয় অনুভূতিকে ধারণ করব আর সা¤প্রদায়িকতাকে বর্জন করব। তিনি বলেন, কান্তজীউ মন্দির থেকে কান্তজীউ বিগ্রহের বিদায় মুহূর্তে লক্ষ মানুষের সমাগম ও মিলনমেলায় কেবলমাত্র হিন্দুরাই সমবেত ছিল না, সকল ধর্মের মানুষদের সমন্বিত শ্রদ্ধা ভক্তি বিশ্বাসে কান্তজীউ বিগ্রহ তিন মাসের জন্য দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে গেলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজ দোবোত্তর এস্টেট এর এজেন্ট রণজিৎ কুমার সিংহ, কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুল হাসান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী, সাধারন সম্পাদক রতন সিংহ, ডা. ডি সি রায় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ বছর আগে। সেই বংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে দিনাজপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর এলাকায় কান্তজিউ মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এই মন্দিরের কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। সেই সময় থেকেই কান্তজিউ বিগ্রহ নয় মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাখা হয়। জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজিউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হয়।

কান্তনগর মন্দির হতে দীর্ঘ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুরঘাট পর্যন্ত শতাধিক ঘাটে কান্তজিউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভিড়ানো হয়। নৌকাযোগে দিনাজপুর আসার সময় হিন্দু ধর্মালম্বী হাজার হাজার ভক্ত নদীর দুই কুলে কান্তজিউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ীর বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সাকসবজি নিয়ে শ্রীশ্রী কান্তজিউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসে। এসময় নদীর দুই কুলে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্যদের ভীড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।

৪৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS