সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পঞ্চগড়ে ছেলের চাকরী না হওয়ায় বাবার মৃত্যু : সভাপতির বাড়িতে লাশ

পঞ্চগড়ে ছেলের চাকরী না হওয়ায় বাবার মৃত্যু : সভাপতির বাড়িতে লাশ

পঞ্চগড় : পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ছেলেকে মাদ্রাসায় চাকুরি দেয়ার নামে ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধানপাড়া দারুলফালা দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি জুলফিকার আলী প্রধানের বিরুদ্ধে।
এদিকে ছেলের চাকরি না হওয়ায় স্টক করে দবিরুল ইসলাম (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার লাশ নিয়ে সাবেক সভাপতির বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে পরিবারসহ এলাকাবাসি।
ওই ১২ লক্ষ টাকা ফেরৎ না দেয়া পর্যন্ত সভাপতির বাড়ি থেকে লাশ সরানো হবেনা বলে জানিয়েছে এলাকাবাসি।
এদিকে এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জুলফিকার আলী প্রধান সাবেক সভাপতি বাড়ি থেকে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। জানা যায়, মৃত দবিরুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত শনিবুল্লাহর ছেলে।
পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসি জানান, গত ২ বছর আগে জুলফিকার প্রধানপাড়া দারুলফালা দাখিল মাদ্রাসায় সভাপতি থাকা অবস্থায় দবিরুলের ছেলে আব্দুস সবুরকে মাদ্রাসায় চাকরি দেয়ার কথা বলে ১২ লক্ষ টাকা চায়। এদিকে দবিরুল জমি, গরু,মাইক্রোবাস বিক্রি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অংকের টাকা মিলিয়ে তাকে ১২ লক্ষ টাকা দেয় চাকরির জন্য। কিন্তু এর মাঝে তার সভাপতির মেয়াদ অতিক্রম হয়ে যায়। অন্যদিকে সব কিছু বিক্রির পরেও ছেলের চাকরি না হওয়ায় শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন দবিরুল। অসুস্থ্যতার মাঝে পরিবারের চাহিদা মিটাতে না পেরে এবং চাকরির জন্য দেয়া ১২ লক্ষ টাকা ফেরত না পেয়ে গত মঙ্গলবার স্টক করে দবিরুল । পরে পরিবারের লোকেরা তাকে রংপুরে নিলে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে মৃত্যুবরণ করে দবিরুল। পরে সেখান থেকে সন্ধায় ছাড়পত্র নিয়ে গ্রামে নিয়ে আসলে চাকরির জন্য দেয়া ১২ লক্ষ টাকা ফেরতের দাবী তুলে গ্রামবাসির সহায়তায় সাবেক সভাপতির বাড়িতে লাশ রেখে দেয়া হয়। টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত লাশ ওই বাড়ি থেকে সরানো হবে না বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসি।
দবিরুলের ছোট ছেলে আব্দুস সবুর বলেন, চাকরি না হওয়ায় বাবা সেই টাকা ফেরতের জন্য অনেকবার তার কাছে গেছে। এমনকি স্থানীয় ভাবে একাধিকবার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সভাপতি সেই টাকা ফেরত দেয় নি। এদিকে আমাদের সব কিছু বাবা বিক্রি করায় মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে অসুস্থ্য হন তিনি। সব কিছুর দায়ী ওই সভাপতি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ঘটনাটির ব্যাপারে স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, ঘটনাটি শোনার পর থানা পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। থানায় অভিযোগ পেলে তদস্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৬০৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares