শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মুক্তির খবরে জয় মাহমুদের পরিবারে ফিরেছে ঈদের আনন্দ 

মুক্তির খবরে জয় মাহমুদের পরিবারে ফিরেছে ঈদের আনন্দ 

ইসাহাক আলী, নাটোর :: একমাত্র ছেলের দীর্ঘ এক মাস পর সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার খবরে আনন্দে আত্মহারা নাটোরের জয় মাহমুদের পরিবার।
একমাত্র ছেলের বন্দিদশার কারণে ঈদের আনন্দ ফিকে হয়ে যায় পরিবারটির। এখন মুক্তির খবরে সেই ঈদের আনন্দ ফিরেছে জয় মাহমুদের পরিবারে।
সোমবার(১৫ এপ্রিল) সকালে প্রতিবেদকে মুঠোফোনে এমনটি জানাচ্ছিলেন জয় মাহমুদের বাবা জিয়াউর রহমান।
জিয়াউর রহমান বলেন, ছাড়া পাওয়ার পর জয় ফোন দিয়ে ভোরে আমাদের খবরটা জানিয়েছে। বলেছে, চিন্তা করার দরকার নেই, আব্বু। আমরা মুক্ত হয়েছি। দুবাইয়ের দিকে যাচ্ছি।
জিয়াউর রহমান বলেন, ঈদের দিনেও আমাদের বাড়িতে কোনো আনন্দ ছিল না। সন্তান যদি অস্ত্রের মুখে থাকে বাপ মা কি ভালো-মন্দ খেতে পারে। ছেলে ছাড়া পেয়েছে শোনার পর থেকেই বাড়িতে সবার মুখে হাসি ফুটেছে। এতো দিন সবাই মনমরা হয়ে থাকতো।
জয় মাহমুদের মা আরিফা বেগম বলেন, ছেলে বিপদে পড়ে আছে, কিভাবে ঈদের আনন্দ করি তখন। ঈদের দিন তেমন রান্না-বান্নাও করিনি। আল্লাহর কাছে শুধু দোয়া করতাম, আল্লাহ আমার কথা রেখেছেন। আমার ছেলে মুক্তি পেয়েছে, এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। তিনি বলেন, মুক্তি পাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগ থেকে মাঝে মাঝে অবশ্য ফোন করতো জয়। তবুও দুশ্চিন্তা হতো। এখন আর দুশ্চিন্তা হচ্ছে না।
জিম্মি অবস্থা থেকে ছেলেকে মুক্ত করায় সরকার ও জাহাজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত তার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ জানান জয় মাহমুদের মা আরিফা বেগম।
জয় মাহমুদের চাচাতো ভাই মারুফ হোসেন  বলেন, জলদস্যদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর জয় ভাই প্রথমে আমাকে একটি মেসেজের মাধ্যমে খবর দেয়। আবার যখন মুক্ত হয় সেই খবরও আমাকে প্রথমে ফোন দিয়ে বললে আমি চাচা-চাচিকে জানাই।
মারুফ বলেন, জলদস্যুদের হাতে জয় ভাই জিম্মি হওয়ার পর থেকেই আমাদের বাড়িতে আনন্দ নামে জিনিসটা হাড়িয়ে গেছিল। সবাই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতো। ঈদের দিনেও বাড়িতে কারো মুখে হাসি ছিল না। তবে মুক্তির খবর পাওয়ার পর থেকে সবাই অনেক আনন্দিত। সবার মুখে হাসি এসেছে, ঈদের খুশি ফিরে পাচ্ছি।
পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য  মজিবর রহমান বলেন, জয় মাহমুদের জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তির খবরে তার পরিবারের সাথে সাথে এলাকাবাসী ও খুশি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব জয় সহ সকল জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। এর ভেতর ছিলেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয় মাহমুদ। তিনি জাহাজটিতে সী- ম্যান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তাদের আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। জানাগেছে , শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটের দিকে জাহাজ থেকে নেমে যায় দস্যুরা। মুক্তিপণের বিনিময়ে গত শনিবার রাতে জাহাজটি নাবিকসহ মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা।#
৪৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares