মঙ্গলবার- ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গুরুত্ব বাড়ছে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের

গুরুত্ব বাড়ছে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের

আশুগঞ্জ মোঃ ফারুক মিয়া ; ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার আশুগঞ্জ নদী বন্দর দেশে বাণিজ্য সহজীকরণে বিপুল সম্ভানা থাকা সত্ত্বেও ১১ বছর আগে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো উন্নযন নমূলক কাজ হয়নি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ) আগামী অর্থবছরে বন্দরের ইজারা মূল্য বাড়ানোর পরিকল্পনা করলেও এর সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তেমন কিছু করা হয়নি। বর্তমানে বন্দরে মাত্র দুটি জেটি রয়েছে, যা এখানে আসা জাহাজের সংখ্যা বিবেচনায় প্রয়োজনের তুলনাড় অনেক কম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিটি জাহাজ থেকে মালামাল খালাশ করতে ৪-৫ দিন সময় লাগে, এতে বন্দরে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। তবে বন্দরে নোঙর করার সাত দিনের মধ্যে জাহাজ খালাস করা না গেলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। বন্দরটি বর্তমানে নৌপথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে, এতে সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হচ্ছে। এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনেও ব্যবহৃত হয়। ২০১১ সালে ভারতের ত্রিপুরার পালাটানা পাওয়ার স্টেশন থেকে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বন্দরটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হযয়েছিল।

এর আগে আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর ফেরিঘাট এলাকায় ছোট-বডয় পণ্যবাহী জাহাজ ও বাল্কহেড নোঙর করত। বর্তমানে এ বন্দরে এক হাজারের বেশি শ্রমিক পণ্য লোড-আনলোড করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি মাসে রড, সিমেন্ট, পাথর, সার, ধান ও গমসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ছোট-বড় শত শত জাহাজ আশুগঞ্জ নদী বন্দরে আসে। জেটির সংখ্যা ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো হলে জাহাজের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। তারা দাবি করে যে তারা বন্দরে তাদের পণ্য রাখার জন্য বিদ্যমান গুদাম ব্যবহার করতে পারে না কারণ এটি ভারতীয় পণ্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত হয়ছিল। তাই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের পর ডেলিভারিতে দেরি হলে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া ট্রাক ইয়ার্ড না থাকায় পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকগুলো বন্দরের সামনের সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় বলে জানান তারা। এ ধরনের সমস্যা সমাধান ও বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে আরও পাঁচটি জেটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী নাসির মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠার ১১ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আশুগঞ্জ নদীবন্দরের অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। আমরা জাহাজ থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছি না। জেটির ঘাটতি রয়েছে। আমাদের একটি ট্রাক ইয়ার্ডও দরকার। নজরুল ইসলাম নামে আরেক ব্যবসাযয়ী বলেন, “একটি জাহাজের পণ্য খালাস না হওয়া পর্যন্ত অন্য জাহাজগুলোকেও বন্দরে নোঙর করতে হবে। তাই জেটির সংকট সবচেয়ে বড় সমস্যা। নিরবচ্ছিন্ন লোডিং আনলোডিং এর জন্য আরও অন্তত পাঁচটি জেটি নির্মাণ করতে হবে।” আশুগঞ্জ নদী বন্দরের ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম নাসির বলেন, বন্দরে যে সুযোগ-সুবিধা আছে তা ইজারার অর্থ বিবেচনায় পর্যাপ্ত নয়। আমাদের জেটির ঘাটতি রয়েছে, গুদামও নেই। তিনি আরো বলেন, সমস্যা সমাধান হলে বন্দর থেকে সরকার উপকৃত হবে। চলতি অর্থবছরে (২০২১-২০২২) আশুগঞ্জের এক ঠিকাদার প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় বন্দরটি ইজারা দেয়। ঠিকাদার বন্দর দিয়ে প্রতি টন পণ্য পরিবহনের জন্য ২৩ টাকা করে ফি গুনতে হয়। এ ছাড়া বন্দরে অবস্থানকালে ছোট জাহাজকে ৩০০ টাকা এবং বড় জাহাজকে ৫০০ টাকা বার্থিং ফি দিতে হয়। বিআইডবিউটিএর উপ-পরিচালক ও বন্দরের দায়িত্ব থাকা মোঃ শহিদুল উল্লাহ বলেন, “একসময় বন্দরটি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তখন বন্দরের ইজারা মূল্যও কম ছিল। কিন্তু এখন বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে। পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি। তাই আগামী অর্থবছরে ইজারা মূল্য বাড়ানো হবে।” তিনি আরো বলেন, বন্দরের আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। জেটির সংখ্যাও বাড়াতে হবে। আমরা এটা বুঝি। ব্যবসায়ীরা তাদের দাবি লিখিত আকারে পাঠালে আমরা তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে

৯৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares