বিরলে মহান স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি
আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর)॥ বিরলে মহান স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, ভবন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকার অবমাননা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না।
অনেকেই মন্তব্য করে বলছেন প্রশাসন দায়সারাভাবে শুধু দিবসটির আয়োজন করে থাকেন মাত্র। এ দিবসের গুরুত্বারোপে কোন প্রশাসনিক তদারকি কোনভাবে চোখে পরেনি।
উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ২৬ মার্চ, ২০২৪ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে গৃহিত কর্মসুচির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুর্য্যােদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, বেসরকারি ভবনসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্ব স্ব অফিস প্রধান/ ভবন মালিকগন এ কর্মসুচি বাস্তবায়ন করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা ? উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনের কর্মসুচি গ্রহনেই সীমাবদ্ধ। কর্মসুচিগুলোর মধ্যে পালন করতে দেখা যায়, ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সুচনা, আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিএনসিসি সমন্বয়ে কুজকাওয়াজ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে ডিসপ্লে প্রদর্শন, ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও পুরুস্কার বিতরনী, বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান, হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং বাদ যোহর সকল মসজিদ/ মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় মহান বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং জাতীয় শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে মোনাজাত/ প্রার্থনা কর্মসুচির মধ্যে ছিল।
মহান ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের গৃহিত কর্মসুচির মধ্যে অন্যতম সুর্য্যােদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, বেসরকারি ভবনসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন স্ব স্ব অফিস প্রধান/ ভবন মালিকগন এ কর্মসুচি বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে পালন করেনি। যে সব প্রতিষ্ঠান বা ভবনসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এর মধ্যে অনেকাংশে তা সঠিকভাবে উত্তোলন করা হয়নি।
সকাল ৯ টায় আমাদের প্রতিবেদক সরজমিনে উপজেলার ১০ নং রাণীপুকুর ইউনিয়নের মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি দেখতে পান। আজকের এই দিনে বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাজেদুর রহমানের ০১৭৪০-৯৭৫৪৭৬ নম্বর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বাড়ীতে আছেন, পরে উত্তোলন করা হবে জানান। তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন হলো কি না এর জবাব কি আপনাকে দিতে হবে বলে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুর্শিদা খাতুন এর মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাজেদুর রহমানকে শোকজ করে এর জবাব চাইবেন বলে জানান।
এছাড়াও বিরল পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক এবং বিভিন্ন ভবনে আজকের এই স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, যমুনা ব্যাংক- বিরল উপশাখা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক- বিরল শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক- বিরল উপশাখা কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করা হলেও তা পতাকা উত্তোলনের নিয়ম মানা হয়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিরল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা রহমান আলী এর মুঠোফোনে আজকের এই দিনে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ভবনসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসে যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ভবনসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি এটা ঠিক করেননি। তাঁরা হয়তো আজকের এই দিনের মর্মতা ভুলে গেছেন। তবে গুরুত্বসহকারে প্রশাসনিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন মনিটরিং করা প্রয়োজন ছিল। এর আগে এটার মনিটরিং একটি টিম গঠন করেছিল উপজেলা প্রশাসন। এবার যে কেন করা হয়নি, জানা নাই।