মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কুড়িগ্রামে ‘ভাওয়াইয়া মুকুট’ উপাধি পেলেন অনন্ত কুমার দেব

কুড়িগ্রামে ‘ভাওয়াইয়া মুকুট’ উপাধি পেলেন অনন্ত কুমার দেব

মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে ভাওয়াইয়া মুকুট উপাধিতে ভূষিত হলেন জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, ভাওয়াইয়া গবেষক অনন্ত কুমার দেব।
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয় গ্রামের কায়েস্থ পাড়ায় শিল্পীর ৭১ তম জন্মদিনে তাঁর নিজ বাড়িতে দিনব্যাপী এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শিষ্য, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীগণ সম্মিলিতভাবে শিল্পীকে এ ভাওয়াইয়া মুকুট উপাধিতে ভূষিত করেন।
অনন্ত কুমার দেব জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয় এলাকার মৃত যতিন্দ্র নাথ দেব ও মৃত প্রফুল্ল বালা দেব দম্পতির পুত্র। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম।
শিষ্য ও ভক্তগণ কর্তৃক গুরু অনন্ত কুমার দেব এর চরণ ধোয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সুচনা ঘটে এবং কেক কেটে ৭১ তম জন্মদিন উদযাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
শিষ্য জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া কন্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক শফিকুল ইসলাম শফি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নজরুল সংগীত শিল্পী নিহারঞ্জন, রাজারহাট, আহমেদুল ইসলাম সঞ্জু ও রণজিৎ, গাইবান্ধা, রাজারহাট লোকসংগীত একাডেমির পরিচালক নাজমুল হুদা, সুন্দরগঞ্জ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক কণ্ঠশিল্পী রেজাউল ইসলাম, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী কল্যানচন্দ্র শীল, ভাওয়াইয়া যুবরাজ প্রয়াত কছিম উদ্দিনের পুত্র জাহাঙ্গীর হোসেন জেহাদ, বাউলীয়ানা ২০১৬ এর চ্যাম্পিয়ন শিবলী সাদিক আতিক, শিল্পী পল্লবী সরকার মালতি, ঢাকা শিল্পকলা একাডেমী থেকে আগত বিশিষ্ট তবলা বাদক তুষার কান্তি পাপুল, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী পঞ্চানন রায়, উলিপুর, ভব তরণ বর্মন, চিলমারী, সংগীত পরিচালক শামসুল ইসলাম সুমন, বাংলাদেশ  বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী আলমগীর প্রধান, সংগীত প্রশিক্ষক দেবাশীষ রায় ও মদন মোগন, জনপ্রিয় শিল্পী আজাদ আলী, বিশিষ্ট তবলা বাদক রফিকুল ইসলাম পটকা,
কুড়িগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু, কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক শফি খানসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত অসংখ্য গুণী ব্যক্তি এবং শিষ্য ও ভক্তবৃন্দ।
উপস্থিত সকলে ভাওয়াইয়া গানের প্রসারে বিশেষ অবদান রাখায় গুরু অনন্ত কুমার দেব’র হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন এবং মাথায় ভাওয়াইয়া মুকুট পড়িয়ে দিয়ে সম্মাননা প্রদান করেন।
সবশেষে তাঁর শিষ্য, ভক্ত এবং শুভানুধ্যায়ীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ভাওয়াইয়া গান মাটি ও মানুষের গান। এ গান মানুষের কথা বলে, জীবনের কথা বলে। এই গানগুলোর মধ্যে দুঃখ কষ্ট, হাসি-কান্না, নারীর মনের আবেদন, আবেগ অনুভূতি, প্রেমের আকুতি সবকিছুই মিশে থাকে। বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলে ভাওয়াইয়া গান সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তবে ভারতের কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম দিনাজপুর, আসামের গোয়ালপাড়া ও ধুবড়ি জেলা এবং বাংলাদেশের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, দিনাজপুর জেলায় এই গান ব্যাপকভাবে প্রচলিত ও জনপ্রিয়। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম জেলা ভাওয়াইয়া নগরী হিসেবে খ্যাতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ধরলা-তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা অঞ্চলে ভাওয়াইয়া গানের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটেছে। আর এজন্য যাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাদের মধ্যে অনন্ত কুমার দেব অন্যতম।
১২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS