শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলায় প্রভাবশালীদের নিষিদ্ধ জালে নিঃস্ব মেঘনার জেলে

ভোলায় প্রভাবশালীদের নিষিদ্ধ জালে নিঃস্ব মেঘনার জেলে

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে নিষিদ্ধ খুটাজাল ও চরঘেরা জালের ফাঁদে প্রতিনিয়তই ধ্বংস হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের কোটি কোটি রেনুপোনা। এতে দেখা দিয়েছে মাছের আকাল।ফলে একদিকে যেমন জেলেদের জীবন জীবিকার ওপর প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র।

দেশের বড় দ্বীপজেলা ভোলার তিন দিকে রয়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী আর একদিকে বঙ্গোপসাগর। ফলে এখানকার প্রায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ মাছ ধরার ওপর নিভর্রশীল। এক সময় সারা বছরই ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কমবেশি ইলিশ পাওয়া যেত। কিন্তু চলতি মৌসুমে কাংখিত ইলিশের দেখা মিলছে না। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে জেলেদের।

বেশি লাভের আশায় প্রভাবশালী কিছু অসাধু জেলে নিষিদ্ধ খুটা, চরঘেরা ও মশারি জাল ব্যবহার করে জাটকাসহ অন্যান্য মাছের রেনু পোনা নষ্ট করছে বলে অভিযোগ মৎস্যজীবী ও আড়তদারদের। প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ তাদের।

জেলেরা জানান, ওই সব জালে ছোট-বড় সব ধরনের মাছই ধরা পড়ে।এমনকি কীটপতঙ্গ পর্যন্ত রক্ষা পায় না ওই জাল থেকে। পরিবেশ অধিদপ্তর মনে করছে এতে চরম হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশ ও নদী।

একাধিক জেলেরা জানান, প্রতিদিনই নদীতে জাল ফেলতে গিয়ে মেঘনার প্রবল স্রোতে তাদের জাল প্রভাবশালীদের খুটাজালের খুঁটির সাথে জড়িয়ে যায়। এরপর ওই জাল আর খুলে আনা সম্ভব হয় না। এতে করে গত কয়েক মাসে লাখ লাখ টাকার জাল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন শত শত জেলে।

তবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রভাবশালীদের লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না তারা। জেলেদের অভিযোগ, প্রশাসন মাঝে-মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও এই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে হাত করেই এমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

অবৈধ জালের বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান, দৌলতখান উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে ভোলা মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে কোস্টগার্ড ও পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৩টি পাইজাল, ৫০টি মশারীজাল জব্দ করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিতে ইতোমধ্যে এসব জাল ও খুঁটি পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া থেকে অবৈধ জাল প্রত্যাহার করতে না পারলে আগামীতে জেলায় মাছের আকাল দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।

১৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS