মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলার চরফ্যাশনে বৈধ জমির মালিকানা ফিরে পেতে আদালতে বিচারপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান

ভোলার চরফ্যাশনে বৈধ জমির মালিকানা ফিরে পেতে আদালতে বিচারপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান

চরফ্যাশন থেকে ফিরে রফিকুল ইসলামঃ ভোলা জেলার চরফ্যাশনের দুলারহাট থানার নীলকমল গ্রামে বৈধ জমির মালিকানা ফিরে পেতে আদালতে বিচার প্রার্থী হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এবং জমির দখল রক্ষায় চরফ্যাশনে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে দু’গ্রæপের নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি কয়েক দফায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি। বেলায়েত হোসেন জানান, সাজাহানের পিতা হানিফের নামীয় রেজিষ্ট্রিকৃত একটি জাল দলিলমুলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি জবর দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। সাজাহানের পিতার নিকট কোন জমি বিক্রি করা হয়নি।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, ভোলা জেলার দুলারহাট থানার নীলকমল গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক ব্যাপারীর ভাগীনা বেলায়েত হোসেন ব্যপারী তার নিজ নামে ছাব কাবলাকৃত দলিলমুলে ক্রয় করা ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। বেলায়েত হোসেন দীর্ঘ দিন ঢাকায় থাকার সুবাধে একই এলাকার ঘোষেরহাটের শাহাবুদ্দিন ও দুলারহাটের আব্দুর রহমান, শাজাহান, সাহেব আলী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি জাল দলিল তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য বেলায়েত হোসেনের নিজ নামীয় ৬ শতাংশ জমি জোর জবর দখল করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে বেলায়েত হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসে এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন হাওলাদারকে বিষয়টি জানালে তিনি ঘটনা লিখে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। পরবর্তীতে বেলায়েত হোসেন তার বৈধ জমি রক্ষায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগ দায়ের করার পর নোটিশের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান বিবাদীপক্ষকে পরিষদে আসতে বললেও বিবাদী গোষেরহাটের শাহাবুদ্দিন, আব্দুর রহমান, সাহেব আলী, শাজাহান ইউনিয়ন পরিষদে শালিস বৈঠকে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানের পরামর্শে বেলায়েত হোসেনের বড় ছেলে ২০২০ সালে দুলারহাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ আমলে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বাধ্য হয়ে বাদী পক্ষ থানা থেকে ফিরে আসে। বিবাদীপক্ষ ২০২০ সালের গত ১৪ অক্টোবরে অতর্কিত ভাবে লোকজন সহ ইট, বালু, সিমেন্ট নিয়ে এসে বেলায়েত হোসেনের নিজ নামীয় সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা করে। এ সময় বেলায়েত হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন বাধা দিলে আব্দুর রহমান, শাজাহান, সাহেব আলী, ঘোসের হাটের শাহাবুদ্দিন ও তার দল বল অতর্কিত ভাবে কোন প্রকার আলোচনা না করেই বেপরোয়া ভাবে হামলা চালিয়ে বেলায়েত হোসেন ব্যাপারীর পরিবারের লোকজনকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। বেলায়েত হোসেনের পরিবারের লোকজন আহত অবস্থায় চরফ্যাশন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের হয়রানী সহ চিকিৎসককে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে চিকিৎসা না দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে বলে বাদী পক্ষের লোকজন অভিযোগ করেছে। বেলায়েত হোসেনের ভাগীনা ফিরোজকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেছে তৎকালীন থানা পুলিশ। বেলায়েত হোসেনের মা, বোন, ভাবি, ভাস্তি, শিশু সহ ছেলের বউকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে এসে নির্যাতন করা হয় এবং ১ লক্ষ টাকা সকলের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। না হলে সকলকে আসামী করে থানায় চালান দেয়া হবে বলে তৎকালীন থানা পুলিশ বাদী পক্ষের লোকজনকে হুমকি প্রদর্শন করে বলে বেলায়েত হোসেনের পরিবারের লোকজন এ প্রতিবেদকের নিকট অভিযোগ দিয়েছে। দুলার হাট থানায় নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হয়ে বাধ্য হয়ে বেলায়েত হোসেনের পরিবার ন্যায় বিচারের জন্য চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এজাহার দায়ের করেন। দুলারহাট থানা কর্তৃপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য বেলায়েত হোসেনকে কোন ভাবে সহযোগিতা না করে মামলার বিবাদীপক্ষকে সব সময় সহায়তা করে আসছে বলে বাদী পক্ষের অভিযোগ। উক্ত জমিতে বর্তমানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। সেই সাথে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য বেলায়েত হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে। পরিবারটি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক সহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

২৬১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares