সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পঞ্চগড়ে হত্যামামলার আসামীদের জামিন, বিচারককে বাদীর জুতা নিক্ষেপ

পঞ্চগড়ে হত্যামামলার আসামীদের জামিন, বিচারককে বাদীর জুতা নিক্ষেপ

পঞ্চগড় : পঞ্চগড় আদালতে একটি হত্যা মামলার আসামীদের জামিন দেয়ায় বিচারকের প্রতি জুতো নিক্ষেপ করেছে মামলার বাদী।
সোমবার ১১ডিসেম্বর দুপুরে এই মামলার আসামীরা আদালতে আত্নসমর্পন করে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক আসামীদের জামিন মঞ্জুর করে।
আসামীদের জামিন দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারকের প্রতি জুতা নিক্ষেপ করেন বাদী মিনারা আক্তার। এ ঘটনায় আদালতে হট্টোগোল শুরু হয়।
সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে জমি যায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ৫ ডিসেম্বর এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে মিনারা আক্তার। জমি যায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দুই ভাইয়ের মধ্যে।
গত ৫ ডিসেম্বর এই বিরোধের জের ধরে কিলঘুষিতে ছোট ভাই আব্দুল মমিন (৬৫) এর হাতে বড় ভাই ইয়াকুব আলী’র (৮৩) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ইয়াকুব আলীর মেয়ে মিনারা আক্তার বাদী হয়ে সদর থানায় ১৯ জনকে আসামী করে একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় আজ সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড় ১ এ, ১৯জন হত্যা মামলার আসামীর মধ্যে ১৫ জন আসামী আত্নসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক অলরাম কার্জী সকল আসামীকে জামিনের আদেশ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাদী পক্ষ। আদালতে হট্টোগোল শুরু হয়।
এসময় বাদী মিনারা আক্তার বিচারকের উদ্দেশ্যে জুতা নিক্ষেপ করে। পরিবেশ থমথমে হয়ে উঠলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা পর আবার আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে বাদী মিনারা আক্তারকে পুলিশ হেফাজতে নেন।
হত্যা মামলার বাদীনি মিনারা আক্তার বলেন আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমি মামলা করেছি আজক আসামীরা জামিন নিতে এসে তাদের আদালত জামিন দিল কেন আমি এর বিচার চাই।
আদালত চলাকালে তিনি চিৎকার করে বলেন আসামীরা এখন আরও আসকারা পেয়ে গেল। আদালতে অপরাধী তৈরী করে অপরাধী তৈরী করার কারখানা। ওরা আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। এই কথা আদালতে বলতে গিয়ে পুলিশ আমাকে এখানে এনে রাখলো কেন।
বাদী পক্ষের আইনজিবী এ্যাড: হাবিবুর রহমান জানান, এই মামলার বিজ্ঞ বিচারক সাধারন মামলাগুলোর আসামীদের জামিন দেয় না। কিন্তু ৩০২ ধারার একটি হত্যা মামলার আসামীদের কিভাবে জামিন দিল এটা সবার মাঝে প্রশ্ন হয়ে দারায়। হত্যা কান্ডের ৭ দিনের মাথায় আসামীরা জামিন পায় আইনজিবী হিসেবে এটা আমরা কখনো দেখি নাই।
এদিকে আসামী পক্ষের আইনজিবী রাকিব হোসেন তারেক জানান, হত্যা মামলার আসামী ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জন আসামীরা জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করে। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে বাদী বিচারকের উদ্দেশ্যে জুতো নিক্ষেপ করে।
এ বিষয়ে আইনজিবী সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল বারি জানান, আদালতে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা আইনজিবীরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করবো।

৩১২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares