বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মনপুরায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

মনপুরায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার মনপুরায় গত দুই দিন ধরে জোয়ারে মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাঁচ গ্রামসহ বিস্তির্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রতিদিনই নিত্য নতুন এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। এতে বেড়ীর ভিতর ও বাহিরে ৪-৫ ফুট জোয়ারের পানিতে হয়ে ৫ হাজার মানুষ বন্দি হয়ে পড়েছে।

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দিনে-রাতে দু’বেলা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ অর্ধহারে-অনাহারে দিনযাপন করছে। সরকারিভাবে কোন সাহায্য না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে পানিবন্দি অসহায় মানুষ।

এদিকে মনপুরা উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চরকলাতলী ও চরনিজামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। সেখানে বেড়ীবাঁধ না থাকায় ৫-৬ ফুট জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রহমান ও মোঃ আমিন। ইউপি সদস্যরা আরও জানান, সেখানকার মানুষ জোয়ার সময় ঘরের চালে অবস্থান নেয়। ওই সমস্ত চরে বসবাস করছে ২০ হাজার মানুষ। জোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় গত দুই দিন ধরে তাদের বেশিরভাগে ঘরের চুলায় হাড়ি না ওঠায় অর্ধহারে-অনাহারে দিনযাপন করছে।

মেঘনার পানি বুধবার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার তা বেড়ে বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরযতিন, সোনারচর, দাসেরহাট, চরজ্ঞান ও চরমরিয়মের বেড়ীর ভিতর ও বাহিরের এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে আছে। ওই সমস্ত এলাকায় ৪-৫ ফুট জোয়ারে পানিতে আটকা পরে ৫ হাজারের অধিক মানুষ কষ্টে দিনযাপন করছে। এছাড়াও উপজেলা মনপুরা ইউনিয়নের রামনেওয়াজ ঢাকা যাওয়ার লঞ্চঘাটটি জোয়ারের পানিতে ডুবে হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার যাত্রীরা। এছাড়াও জোয়ারের পানিতে মসজিদ-মাদ্রাসাও প্লাবিত হয়।

প্লাবিত এলাকার কুলসুম, জসিম, হাসিনা বেগম, স্বপ্না, জাবেদ, সজিব, কায়ছারসহ অনেকে জানান, গত বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার জোয়ারের পানি বেশি হয়। এতে তাদের ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে। কিন্তু আমারা গত দুইদিন ধরে মুড়ি খেয়ে কোনমতে জীবনযাপন করছি। কেউ সাহয্য সহযোগিতা করেনি। প্রশাসনের কেউ খোঁজ-খবর নিতে আসেনি। আল্লাহ ছাড়া আমাদের দেখার কেউ নেই।

হাজীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার জানান, আমার ইউনিয়নের দাসেরহাট, সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান ও চরমরিয়মের বেড়ীর ভিতর ও বাহিরে বিস্তির্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকে নৌকা করে এলাকা ঘুরে দেখেছি। মানুষ অর্ধহারে-অনাহারে দিনযাপন করছে । ওই সমস্ত এলাকায় সরকারি সাহয্য সহযোগিতার দাবী করেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার জোয়ারের পানি বেশি। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের মেরামত বা রক্ষার্থে কিছু প্রকল্প গ্রহন করেছি।

এই ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নওরীর হক জানান, দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।

৭২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares