মঙ্গলবার- ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সভাপতি’র সিল ও স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

সভাপতি’র সিল ও স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।পটুয়াখালীর দশমিনায় সভাপতির সিল ও স্বাক্ষর জাল করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।

সভাপতি মো. সোহরাব হোসাইন জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারী মো. আব্দুল জলিলের এমপিও বাতিলসহ জালিয়াতি চক্রের হোতাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর গত মাসের ২৯তারিখ একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়াও মাউশি বরিশাল অঞ্চলের বিভাগীয় উপ-পরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দশমিনা ও ব্যবস্থাপক সোলালি ব্যাংক দশমিনাকে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রেরন করেন। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা নাজ নীরা তদন্ত শুরু করেন। ওই তদন্তে প্রধান শিক্ষকের জালিয়াতির বিষয়টি ফুটে আসে এবং প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন নিজেই সভাপতিকে ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং সভাপতির সিল ও স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি তদন্ত কমিটির কাছে শিকারক্তি মূলক জবানবন্ধী দেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন ম্যনেজিং কমিটির সভাপতির সিল ও স্বাক্ষর জাল করে মো. আব্দুল জলিল নামের একজনকে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২১ সালের ৬ ডিসেম্বর এমপিও ভূক্তির জন্য ডিজির কাছে সুপারিশ করেন। অথচ মো. আবদুল জলিল নামের কাউকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সভাপতি কিছুই জানেননা। সভাপতি ছাড়া প্রধান শিক্ষক কিভাবে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে সিল ও স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন তার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেন। নিয়ম অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বোর্ড গঠন করতে হলে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিই হচ্ছে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি। কিন্তু এখানে হয়েছে তার উল্টো। সভাপতিকে না জানিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

ওই নিয়োগ বোর্ডে মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে দেখানো হয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়াকে তিনি বলেন, নিয়োগের বিষয়টি আমি জেনেছি। কিন্তু এরকমের কোন নিয়োগ বোর্ডে আমি ছিলাম না। আমার সিল ও স্বাক্ষর জাল করে বসানো হয়েছে। এটা প্রধান শিক্ষক ঠিক করেনি।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সভাপতির সিল ও স্বাক্ষর জাল করে সম্পূর্ণ সাজানো ও ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন এবং মোটা অংঙ্কের বানিজ্য করেন এটা স্পস্ট। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে ছাড়া কিভাবে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে এটা আমার বেধগম্য নয়। নিয়োগের কাগজপত্র যাচাই করলে জালিয়াতির বিষয়টি প্রমানিত হবে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, নিয়োগ সম্পর্কে সভাপতি সব কিছুই জানেন। তার নিজের বাড়ীর একজন প্রার্থী ছিল। ওই প্রার্থী না নেয়ায় বাড়ীর লোকদের বুঝানোর জন্য এসব বলে বেড়াচ্ছে।

এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা নাজ নীরা বলেন, হাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. সোহরাব হোসেনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করেছি এবং কাগজপত্র যাচাই শেষে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন নিজেই তার অনিয়মের বিষয়টি শিকার করেছেন। এছাড়াও সভাপতি’র সিল ও স্বাক্ষর জাল এবং সভাপতিকে ছাড়াই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথাও শিকার করেছেন। তদন্তে অনিয়মের বিষয়টি প্রমানিত হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে বিধি মোতাবেগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

১১০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares