শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইউপি সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি, থানায় অভিযোগ

ইউপি সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি, থানায় অভিযোগ

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছে ইউপি সদস্যরা। পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্য মঙ্গলবার পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর চেয়ারম্যান হান্নান প্রকাশ্যে মেম্বারদের প্রণনাশের হুমকি দিয়েছে। মেম্বাররা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে।

দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায়। সে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই সরকারি বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে দরিয় প্রভাব খাটিয়ে স্থানিয় পেশি শক্তির বলে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে।

ইউপি সদস্যরা বলেন, পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতো অভিযোগ করার পর,গত ৪ মে বিকেলে উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আপস মিমাংসার লক্ষে  চেয়ারম্যান ও আমাদের ডেকেছিল। সেখানে চেয়ারম্যান সকলের উপস্থিতে উত্তেজিত হয়ে বলেন আমার বাপ/চাচা মাডার-খুন করেছে প্রয়োজনে আমি ও করবো। এখন আমরা নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছি।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বিভিন্ন প্রকল্পে ইউপি সদস্যদের নামমাত্র পিআইসি রেখে তিনি নিজেই কাজ করেন এবং পরে পিআইসিকে জোরপূর্বক বিলে স্বাক্ষর করিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। ইউনিয়ন পরিষদে তিনি মাসিক মিটিং না করে ইউপি সদস্যদের সারা বছরের মিটিং এর রেজুলেশনে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ইউপি সদস্যদের পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া,এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে বাৎসরিক বাজেট ঘোষণা করা হয় না। ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় ১০ টন টিআর বরাদ্দ হয়। কিন্তু সেই প্রকল্পে কোনো কাজ করা হয়নি। ওই বছর কাবিটা কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ৬২ হাজার টাকায় রাস্তায় মাটি ভরাটের একটি প্রকল্পে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নেয় চেয়ারম্যান। একই অর্থবছরে জনগণের ট্যাক্স এবং রাজস্বের ২ লাখ টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, মৃত্যু সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ আদায় কৃত টাকাও চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতে জমা করেনি। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে হতদরিদ্র ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেয়নি এই চেয়ারম্যান। সঞ্চয়ের টাকা হতদরিদ্ররা ফেরত চাইলে তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। গ্রাম আদালত পরিচালনা না করে নিজেই সালিশি কার্যক্রম পরিচালনা কওে ।

ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী বলেন, আমরা জনগণের ভোটে সদস্য হয়েছি। তাই জবাবদিহিতা করতে হয়। কিন্তু চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। এভাবে চলতে পারে না। নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, আমি কিংবা কোনো মেম্বার ফেরেশতা নই। কিছু ভুল ত্রæটি থাকতে পারে। তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয়।

বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেনের বলেন, অভিযোগ জমা দিয়েছে কিনা। অফিসে গিয়ে দেখতে হবে। আজকে অফিস ছুটি। তাই বিষয়টি জানানো যাচ্ছে না।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ রাসেদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয় স্বীকার করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৪৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares