শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যা মামলার ২৮ বছর পর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক প্রধান আসামী গ্রেফতার

অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যা মামলার ২৮ বছর পর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক প্রধান আসামী গ্রেফতার

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় কৈলাটি ইউনিয়নে ১৯৯৫ সালে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণের পর দলবদ্ধ ধর্ষণ করে টুকরো টুকরো  হত্যার ঘটনার  মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ২৮ বছর ধরে পলাতক প্রধান আসামি আ. রাজ্জাক ওরফে জাকির হোসেনকে (৬০) গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩) । ২৮ বছর যাবৎ ছদ্মবেশে পলাতক ছিলেন তিনি ।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আ. রাজ্জাক নেত্রকোনার  কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের হাঁপানিয়া কলমাকান্দা নামক গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র।

গত শনিবার রাতে তাকে গাজীপুর জেলার গাছা থানার হারিকেন নামক এলাকায় নিজ বাসা  থেকে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩) গ্রেফতার করে গত রোববার রাতেই কলমাকান্দা থানা পুলিশের নিকট  হস্তান্তর করেন। পরে আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ আ: রাজ্জাককে নেত্রকোনা জেলা  আদালতে প্রেরণ করেন।

র‌্যাব-৩  ও পুলিশ এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে , ১৯৯৫ সালে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের হাঁপানিয়া কলমাকান্দা নামক গ্রামের রাজ্জাক তার প্রতিবেশি কিশোরী হেলেনাকে নানাভাবে উক্তত্য করতো। হেলেনা কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে আ: রাজ্জাক তার সহযোগীদের দিয়ে তাকে অপহরণ এবং দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে তাকে নির্মমভাবে টুকরো টুকরো করে হত্যা করে  মরদেহ বস্তায় করে মাটিতে পুতে রাখে।  ঘটনার ৬ দিন পর ভিকটিমের মরদেহ পাউরা হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারে লোকজন অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে খুঁজে না পাওয়ায় ভিকটিমের বাবা রুস্তম আলী সন্দেহপূর্বক গ্রেপ্তার আ. রাজ্জাকসহ কয়েকজনের নামে একটি গুম মামলা করেন।

ইতোমধ্যে ভিকটিমের পরিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের মরদেহ চিহ্নিত করে। পরে কলমাকান্দা থানায় আ. রাজ্জাককে প্রধান আসামি করে মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অপরণ ও খুনসহ ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা। পরে ওই মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল রাজ্জাক@জাকির হোসেনকে দোষী স্যাবস্ত করে নেত্রকোনা জেলা আদালত মৃত্যুদন্ডসহ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে বাঁচতে নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে গাজীপুরের গাছা থানার  হারিকেন নামক এলাকায় ২৮ বছর ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। ওই মামলায়  আসামির মধ্যে দুইজন পলাতক ছিলেন। বাকিদের আগেই গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

এবিষয়ে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম (পিপিএম) সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে বাঁচতে নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে গাজীপুরের গাছা থানার হারিকেন এলাকায় পরিবার নিয়ে  বসবাস করছিলেন । তার আসল নাম হচ্ছে আ: রাজ্জাক। সে এখন জাকির হোসেন নাম ধারণ করে ছিলেন। ২৮ বছর ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩) এর  সহযোগিতায় পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি আ: রাজ্জাক@জাকির হোসেন (৬০) কে নেত্রকোনা জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আবুল কালাম আরো জানান, আ: রাজ্জাকের নামে কলমাকান্দা থানায় দুইটি জিআর মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

৫৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares