শনিবার- ১লা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অফিসের চেয়ারে বসা নিয়ে দুই খাদ্য কর্মকর্তার ঝগড়া গড়াল অভিযোগে

অফিসের চেয়ারে বসা নিয়ে দুই খাদ্য কর্মকর্তার ঝগড়া গড়াল অভিযোগে

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :  খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অফিসের চেয়ার ও কম্পিউটার সবসময় দখল করে রাখেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। এতে বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করায় দুই কর্মকর্তার মাঝে ঝগড়া লেগে যায়। সেই ঝগড়া শেষ পর্যন্ত অভিযোগ পর্যন্ত গড়ায়।
এ অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এ ঘটনা নেত্রকোনার কলমাকান্দায় উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) কৃষ্ণা মজুমদার ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কায়সার আহমেদের মধ্যে এ ঝগড়ার ঘটনাটি ঘটে।
এঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কায়সার আহমেদ জেলা খাদ্য কর্মকর্তার কাছে গত ১৭ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তিনি ওসি এলএসডি কৃষ্ণা মজুমদারের বিরুদ্ধে স্থানীয় ডিলারদের চাল কম দেওয়ার অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদ করায় কৃষ্ণা মজুমদার তার সাথে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
 জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের  নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দুয়া উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তকর্তা মো. শহীদুল্লাহকে অভিযোগ তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কলামাকান্দা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কায়সার আহমেদ সাংবাদিকদের জানান  , ওসিএলএসডি কৃষ্ণা মজুমদার স্থানীয় ডিলারদের চাল ওজনে কম দেন। আমি এসবের প্রতিবাদ করি। সেকারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমার সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেছেন। এ বিষয়ে জেলা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি এলএসডি কৃষ্ণা মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদ ভবনে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কায়সার আহমেদের নিজের অফিস থাকার পরও  খাদ্য গোদামে থাকা আমার অফিস দখল করে রাখেন তিনি। এমনকি আমার কম্পিউটরও তিনি সব সময় ব্যবহার করেন। তাঁর অফিসের সমস্ত লোকজন সারাক্ষণ আমার অফিসে বসে থাকে। কর্মকর্তা নিজেও প্রায় সময় আমার চেয়ারে এসে বসে থাকেন। সেকারণে নিজের অফিসে আমি আমার মতো করে কাজ করতে পারি না। একটা অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকি সবসময়। অথচ উনার নিজের অফিস তিনি ব্যবহার করেন না। এখন এ বিষয়টি তাকে বলতেই  চালে কম দেওয়ার মিথ্যা গল্প বানিয়ে জেলা কর্মকর্তার কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। অথচ গত ১৭ অক্টোবর যেদিন তিনি অভিযোগ দিয়েছেন, সেদিন কোন চাল বিতরণ ছিল না। তাছাড়া অভিযোগপত্রের লিখিত ভাষাগুলোও কি বিচরি নোংরা।
তদন্তের দায়িত্বে থাকা কেন্দুয়া উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তকর্তা মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, গত মঙ্গলবার জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পেয়ে বুধবার সরেজমিন তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আজ রোববার জমা হবে । তদন্তে কি পেয়েছেন, এমন প্রশ্নের কোন জবাব দিতে চাননি তিনি।
উপজেলা পরিষদ ভবনে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার অফিস আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলামাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের নব নির্মিত ভবনে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে একটি অফিস কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে এখনো বসার মতো ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া পুরাতন ভবনে তার কোন অফিস নেই। ফলে খাদ্য গোদামের  ওসিএলএসডির অফিসটিই দুজনে ব্যবহার করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের  জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares