সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সদস্য পদ বঞ্চিত সাংবাদিকদের ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম
দুলাল সরকার, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : দীর্ঘ দুই যুগ ধরে সাংবাদিকতার সাথে জড়িত এবং সব ধরনের যোগ্যতা থাকায় নিয়মানুযায়ী আবেদন করার পরও নীলফামারীর সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সদস্য পদ বঞ্চিত সাংবাদিকরা সদস্য করার জন্য ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। গত রোববার (১৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টায় প্রেসক্লাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত আবেদন করার মাধ্যমে বৈষম্যের শিকার প্রায় ৩০ জন সংবাদকর্মী তাদের অধিকার আদায়ের জন্য এই সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা একেক জন প্রায় ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে এ পেশায় যুক্ত। সংবাদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশঙ্কা এবং পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের স্বার্থে সংবাদকর্মী মাত্রই ইচ্ছা থাকে প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়া। কিন্তু সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে একেক জন একাধিকবার সদস্য পদের জন্য আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। বরাবরই কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সাথে কাল্পনিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ, আবার কখনোবা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ইশারা-ইঙ্গিতে আমাদেরকে অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। এখনও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমেই সৈয়দপুর প্রেসক্লাব পরিচালনা হচ্ছে। স¤প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গোটা দেশে বৈষম্যবিরোধী চর্চা ও সংস্কার শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারাদেশের বিভিন্ন প্রেসক্লাবে সংস্কার চলছে। ফলে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে আমাদের সদস্যভূক্তির বিষয়টি নিয়ে আমরাও আশান্বিত হয়েছি। কোন রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়, বরং পেশাদারিত্বের মাপকাঠিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীগণ প্রেসক্লাবের সদস্য পদ লাভ করবেন, এটা এখন সময়ের দাবী। বিধায়, দল-মতের উর্দ্ধে থেকে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দিয়ে আগ্রহী সংবাদকর্মীদের ৭২ ঘন্টার মধ্যে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিনীত অনুরোধ করছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে বৈষম্যের শিকার সংবাদ কর্মীদের পক্ষে আবেদনটি পেশ করেছে দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সৈয়দপুর সংবাদদাতা মো. জাকির হোসেন। আবেদনটি প্রেসক্লাবে জমাদানকালে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত না থাকায় দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলন (দৈনিক দিনকাল) তা গ্রহণ পূর্বক প্রাপ্তি স্বীকার মুলক স্বাক্ষর করেন। এসময় বর্তমান কমিটির কার্যকরী সদস্য সাদিকুল ইসলাম সাদিক পাশে ছিলেন। আবেদনকারী তথা সদস্য হতে ইচ্ছুকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দা রুখসানা জামান শানু (দৈনিক যুগান্তর), শাহিদুল সরকার দুলাল (দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন), শাহজাহান আলী মনন (দৈনিক আনন্দ বাজার), এম আর মহসিন (দৈনিক জনকণ্ঠ), সাব্বির আহমেদ সাবের (দ্যা ডেইলি অবজারভার), জয়নাল আবেদীন হিরো (দৈনিক ভোরের পাতা), মো. জহুরুল ইসলাম খোকন (দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন), নুর মোহাম্মদ ওয়ালীউর রহমান রতন (দৈনিক আমার সংবাদ), মাইনুল হক (এশিয়ান টিভি), ফিরোজ আহমেদ (দৈনিক ঢাকা), আকাসদ্দৌলা আকাশ (দৈনিক আমার বার্তা), রাজু আহমেদ (দৈনিক বায়ান্নর আলো), নওশাদ আনসারী (দৈনিক মানবকন্ঠ) প্রমুখ। পরে আবেদনের অনুলিপি সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী ও সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামের হাতে হাতে দেয়া হয়। সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিসেও সরাসরি দেয়া হয়েছে। আর রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, সেনাবাহিনীর সৈয়দপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বরাবর ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দপুর উপজেলা আমীর ও সেক্রেটারি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়কের কাছে সরাসরি দেয়া হবে বলে জানান বৈষম্যের শিকার সংবাদ কর্মীরা।