শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ইন্টার্ন নারী চিকিৎসক শ্লীলতাহানির অভিযোগে নিরাপত্তা প্রহরী গ্রেফতার

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ইন্টার্ন নারী চিকিৎসক শ্লীলতাহানির অভিযোগে নিরাপত্তা প্রহরী গ্রেফতার

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শায়েস্তানগরী ,নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানীর (শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত) অভিযোগে একটি বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরী আশরাফ উদ্দিন (৫০) বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের জরুরী বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক ইন্টানিং চিকিৎসকরা একত্রিত হয়ে ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে কয়েক দফা মারধর করে আহত করে। পার আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিরাপত্তা প্রহরী কর্তৃক ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানীর ঘটনার প্রতিবাদে ও হেনস্তাকারীর গ্রেফতারের দাবিতে রোববার বিকাল থেকে সোমবার বিকাল পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করে। পরে ওই ঘটনায় হেনস্তার শিকার ওই নারী চিকিৎসক সুধারাম মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে রোববার রাতে পুলিশ তাকে জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক করে সুধারাম থানায় নিয়ে আসে। এবং সোমবার বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয় । অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর ইন্টান চিকিৎসকরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো.হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হেনস্তার শিকার আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন নারী চিকিৎসক জানান রোববার তিনি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডিউটি শেষে মাইজদী শহরের বাসায় ফেরার পথে জরুরী বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে রোহিঙ্গা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী আশরাফ উদ্দিন (৫০) এর মুখোমুখি হন। এসময় আশরাফ উদ্দিন শারীরিক ভাবে নারী চিকিৎসক কে হেনস্তা করেন। এসময় নারী চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা এক যুবক তাকে ধরে মারধর করে। ওই খবর দ্রæত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা ঘটনাস্থল এসে ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে ব্যাপক মারধর করে। এসময় সে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তাকে বিকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে ও ওই নিরাপত্তা প্রহরীর গ্রেপ্তার এবং চাকুরীচ্যুত করার দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোববার বিকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেন।

খবর পেয়ে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা.মাসুম ইফতেখার ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক সহ রাতেই হাসপাতাল পরিদর্শন করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসয় ইন্টার্ন চিকিসকদের দাবি ধাওয়া মেনে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় নারী চিকিৎসক রোববার সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ রাতে নিরাপত্তা প্রহরীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. অনিক বিশ্বাস বলেন প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন নারী চিকিৎসকে হাসপাতালে শারীরিক ভাবে হেনস্তা করা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। হাসপাতালে নারী চিকিৎসকরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করছে। ডিউটি ডাক্তারের রুম থেকে রাতের বেলায় অন্যান্য ওয়াডে যেতে সড়কে বাতি থাকে না। এসময় বহিরাগত বখাটেরা হাসপাতালের বিভিন্ন সড়কে মাদক সেবন করে এবং নারী চিকিৎসকদের উত্যাক্ত করে। তাই নারী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, ডিউটি ডাক্তারের কক্ষে টয়লেট ও পযাপ্ত ফানিচারের ব্যবস্থা করা এবং তাদের ইন্টার্ন শিপ ভাতা প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানান। তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সোমবার বিকাল থেকে কাজে যোগদান করেছেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ওই ঘটনার পর হেনস্তাকারী নিরাপত্তা প্রহরীকে পুলিশে সোপর্দ ও চাকুরীচুাত করা হয়েছে।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন নারী চিকিৎসককে হেনস্তার ঘটনায় তাৎক্ষনিক ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। এই ঘটনায় নোয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাইমা নুসরাত জেবিন কে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আনোয়ারুল ইসলাম বলেন নারী চিকিৎসকের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরী হিসাবে নথি ভ‚ক্ত করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে।

৬৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares