প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নভঙ চীনের বাসিমা প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র অচল
পটুয়াখালী প্রতিনিধি : চীনের ‘বাসিমা’ কোম্পানির সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত পটুয়াখালীর দশমিনায় ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদ কেন্দ্র অচল। তেঁতুলিয়া নদী বেষ্টিত বিদ্যুতহীন বীজ বর্ধণ খামারে রাতে সৃষ্টি হয় ভূতুরে পরিবেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ দেশের সর্ববৃহৎ বীজ বর্ধণ খামার উদ্বোধনে এসে উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন চর বাঁশবাড়িয়ায় বিজ্ঞানী, গবেষক, কৃষিবিদ, দর্শনার্থী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির স্বপ্ন নিয়ে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেন বলে জানায় বিএডিসি সূত্রে। এরই ধারাহিকতায় ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় গাজীপুরের বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডকে। খামারের মধ্যে ৪০ হাজার ৮০৪ বর্গফুট আয়তনের জমির ওপর ৮ কোটি ৪৯ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৩ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। নির্মাণের পর থেকে অচল থাকায় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নভঙসহ সরকারি পরিকল্পনা আলোর মূখ দেখেনি।
প্রকল্প কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তাসির হিসমী জানান, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড চীনের বাসিমা কোম্পানীকে দিয়ে এই প্লান্টের কাজ করায়। দেশের একমাত্র খড়খুটা ভিত্তিক বায়োগ্যাস প্লান্ট ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র এটি। ৫’শ ঘনমিটার বায়োগ্যাস উৎপাদনসহ গ্যাস চেম্বারে সর্বক্ষণিক ৩’শ ঘনমিটার পিওর গ্যাস মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে এই প্লান্টে। পিওর গ্যাস দিয়ে চলবে জেনারেটর। একটি থেকে ৫০ কিলোওয়াট ও অপরটি থেকে ৩০ কিলোওয়াট অর্থাৎ মোট ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমে প্লান্টের প্রসেসিং ইউনিটে দেড় টন খড়খুটা দেয়া হবে। খড়খুটা ছোট ছোট টুকরো হয়ে প্রবেশ করবে ডাইজেস্টার চেম্বারে। ডাইজেস্টার চেম্বার অপর দুটি চেম্বারে জমা গ্যাস। সেখান থেকে গ্যাস শোধনাগার চেম্বারে জমা হবে। পরে গ্যাস শোধন হয়ে পিওর গ্যাস চেম্বারে যাবে।
‘সর্বশেষ পিওর গ্যাস দিয়ে জেনারেটর চালু হবে। প্লান্টে দুটি জেনারেটর রয়েছে। এর একটি থেকে ৫০ কিলোওয়াট ও অপরটি থেকে ৩০ কিলোওয়াট অর্থাৎ মোট ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ পুরো খামারের চাহিদা পূরণ করেও অবশিষ্ট থাকবে।’
প্লন্টে ব্যবহৃত খড়খুটা দিয়ে তৈরি হবে জৈবসার। যাহা খামারে ব্যবহারের পর অন্যত্রেও পাঠানো যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্প কর্মকর্তা জানায়, খুড়িয়ে খুড়িয়ে গ্যাস উৎপাদনের পরীক্ষা চালানো হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জৈবসার তৈরির ঘটনা স্বপ্নই রয়ে গেল। দেশের বৃহৎ বীজ বর্ধণ খামারে আজও রাত হলে বিরাজ করে ভূতুরে পরিবেশ।
এ বিষয়ে বীজ উৎপাদন খামারের সহকারি পরিচালক শেখ ইকবাল হোসেন বলেন, খড়খুটা ভিত্তিক বায়োগ্যাস প্লান্টে বিদ্যুত উৎপাদনের উদ্যোগ দেশে এটাই প্রথম। কিন্তু খামারের খড়খুটা কিছুদিন সংরক্ষিত থাকলে এর গুণাগুণ হারিয়ে যায়। যা দিয়ে গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।#